thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

সমজাতীয় ব্যাংক থেকে আলাদা হলো বেসিক ব্যাংক

২০১৭ মার্চ ১৯ ১৯:৪১:৩৩
সমজাতীয় ব্যাংক থেকে আলাদা হলো বেসিক ব্যাংক

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দুর্নীতির কারণে মূলধন সংকটে থাকা বেসিক ব্যাংককে সমজাতীয় অন্যান্য সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে আলাদা করা হল।

সচিবালয়ে রবিবার (১৯ মার্চ) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো নিয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

‘নার্সিং’ করে এ বেসিক ব্যাংককে আবার মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারি মালিকানাধীন পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংক আর দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে আজকে বসেছিলাম। সভায় ব্যাংকগুলোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।’

প্রত্যেকটি সরকারি ব্যাংক দুর্বল ব্যাংক- মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু ঘাটতি আছে। হয় মূলধন ঘাটতি, না হয় প্রভিশন সমস্যা- প্রত্যেকেরই আছে।’

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বেসিক ব্যাংকের সমস্যা অন্যান্য ব্যাংক থেকে আলাদা। নতুন ব্যবস্থাপনা হওয়ার পর কতগুলো জিনিস বেশ ভাল কাজ করেছে। কারা টাকা পয়সা নিয়েছেন, তাদের যথেষ্ট লোককে আবিষ্কার করতে পেরেছি। আবিষ্কার করার মহামুশকিল সেখানে ছিল। ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের দেনা-পাওনার হিসাব-টিসাব করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার দেখলাম বেসিক ব্যাংকের প্রবলেম এমন যে এটাকে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে সমমানে বিচার করা যাবে না। এটাকে একটু বেশি নার্সিং করতে হবে।’

সভায় দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে যখন আমরা আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে কোন কিছু আলোচনা করব, বেসিক ব্যাংক উইল আউট অব ইট (বাইরে থাকবে)। কারণ বেসিক ব্যাংককে ট্রিটমেন্ট করে একটা ভাল অবস্থায় আনতে আমরা চেষ্টা করব। এজন্য একটা টাইম সিডিউল করব কতদিনের মধ্যে এটা হতে পারে।’

‘তারা (বেসিক ব্যাংক) আলাদা থাকবে কারণ বেসিক ব্যাংক থাকলে আর কিছু আলোচনা করা যায় না। সবাই এটা নিয়ে কথা বলে। সব সময় এখানে চলে যায়। কার্যকর কিছু হয় না’ বলেন মুহিত।

সভায় অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মূলধন সংকট এরমধ্যে একটি। তাদের (সরকারি ব্যাংক) বন্ড ইস্যুর ক্ষমতা আছে কিনা সেটাও আলোচনায় এসেছে বা তারা সেই ক্ষমতা ব্যবহারে সক্ষম কিনা। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে কোন কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনাগুলো চলবে। কোন কিছুতেই আমার ফাইনাল ভিউতে পৌঁছাই নাই।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আলাদাভাবে বেসিক ব্যাংকের আলোচনা চলবে। আর ওনাদের (অন্যান্য ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা) সঙ্গে আরও আমার বসতে হবে। কেননা আমরা বাজেটে রেখেছি, তাদের মূলধন সংকটের কিছুটা দেব। সেটা এরমধ্যে আমার ঠিকঠাক করব। কখন আমরা আবার বসব জানি না, তবে শিগগিরই বসব। কারণ বাজেটারি ক্যাপাসিটি যা আছে তা আগামী মাসের মধ্যে সম্পন্ন করব।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বেসিক একটা বিশেষ প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে। তাদের দেনাদার ও পাওনাদার সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট জানি। এগুলোকে বিট করতে হলে কী করতে হবে-সেটা এখন ঠিক হবে।’

‘বেসিক ব্যাংক বলে, তাদের ক্যাপিটালাইজেশন এমন করতে হবে-সেটা অসম্ভব। এটা হতেই পারে না। অন্য কীভাবে তাদের রিকোয়ারমেন্ট মিট করা যায়-সেটা চিন্তা করবে হবে। ওটা আমাদের মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিবে।’

বেসিক ব্যাংকের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা দুদকের কাছে কাগজপত্র আছে, তারা যেভাবে ব্যবস্থা নেবে-সেভাবেই হবে।’

বেসিক ব্যাংকের আগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না- এ বিষয়ে মুহিত বলেন, ‘অপেক্ষা করেন, দেখেন, যে রিপোর্ট হয়েছে বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে, সেটা দুদকের কাছে রয়েছে। দুদক যে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে।

এখন বেসিক ব্যাংকের মূলধন সংকট ১৫ হাজার কোটি টাকা, আর বাজেটে তাদের ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এটা কীভাবে সমন্বয় হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দ্যাটস নট পসিবল।’

তিনি আরও বলেন, ‘(মূলধন সংকটের জন্য ব্যাংকগুগলোকে) গত বছরের বাজেটের টাকা কিছু কিছু দিয়েছি। এ বছরেরটা দেওয়া হয়নি। এ বছরেরটা আগামী মাসের মধ্যে দেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর বেসিকের টাকা গর্তে পড়ছে না। বেসিকে কোন টাকা দিলেই সেটা এখন জলে যাবে না। এটা শিউর।’

এ সময় অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘(বেসিক ব্যাংক) এবার লাভও করেছে কিছু।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/এনআই/মার্চ ১৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর