thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

যশোরে কোটি টাকা নিয়ে উধাও জনতা সঞ্চয় সমিতি

২০১৭ মার্চ ২১ ২৩:১০:২২
যশোরে কোটি টাকা নিয়ে উধাও জনতা সঞ্চয় সমিতি

দেবু মল্লিক, যশোর : এহসান মাল্টিপারপাসের পর যশোর থেকে গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে এবার লাপাত্তা হয়েছে জনতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বেশি মুনাফার প্রলোভনে পড়ে সাধারণ মানুষ গত সাত বছরে এই প্রতিষ্ঠানটিতে কোটি কোটি টাকা জমা রাখেন। কিন্তু এতোদিন নিয়মিত মুনাফা পরিশোধ করলেও দিন দুয়েক আগে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা অফিস তালাবন্ধ করে উধাও হয়ে গেছেন। এ নিয়ে শত শত গ্রাহক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

জানা যায়, ২০১১ সালের দিকে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার রূপালী ব্যাংক অফিসের তৃতীয় তলায় অফিস খোলে জনতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড। তারা দালালের মাধ্যমে সাধারণ মনুষের কাছে প্রচারণা চালায় তাদের কাছে ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা এককালীন জমা রাখলে প্রতিমাসে ১৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে। টাকা রাখা যাবে এক মাস থেকে পাঁচ বছর যে কোন মেয়াদে। মেয়াদ বেশি হলে সুদের হারও বেশি হবে। এই প্ররোচনায় অনেকে এই প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা জমা রাখেন। যশোর শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার গৃহবধূ তসলিমা বেগম বছর চারেক আগে এই প্রতিষ্ঠানে এফডিআর হিসেবে জমা রাখেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। এই সময়ে তিনি তার প্রাপ্য মুনাফা প্রতি মাসে পেয়েছেন। এজন্য দিন ১৫ আগে তার পরিবারের আরেক সদস্য হাফিজা খাতুন এফডিআর করেন ১০ লাখ টাকা। হাফিজা খাতুন বলেন, ‘তসলিমা বেগমের জমা রাখা টাকার বিপরীতে মাসিক মুনাফা ওঠানোর দিন ছিল গত সোমবার। কিন্তু তিনি টাকা ওঠাতে গিয়ে অফিস বন্ধ পান। এ খবর পেয়ে আমি আমার ছেলেকে নিয়ে পালবাড়ি অফিসে যাই। কিন্তু অফিস বন্ধ পাই। কোম্পানির কর্মকর্তারা মোবাইল ফোনও ধরছেন না। আবার কোন কোন সময় বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।’ জনতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডে ১০ লাখ টাকা এফডিআর করা মুড়লী এলাকার মোটরপার্টস ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ‘যশোরের রাজারহাট-মুড়লী, মনিহার এলাকা নিয়ে একটি এলাকা। এই এলাকায় কোম্পানির কয়েক শ’ গ্রাহক রয়েছে। যারা শুধু এফডিআর করেছেন তা নয়, একই সাথে দৈনিক ভিত্তিতে সঞ্চয়ও করেন। এছাড়া ঋণের কিস্তির বিপরীতে প্রতিদিন বাধ্যতামূলক ৫০ টাকা সঞ্চয় করতে হয়। যশোরে প্রতিষ্ঠানটির এমন ছয়টি সাংগঠনিক এলাকা রয়েছে। এতোদিন তারা ভাল সার্ভিস দিলেও হঠাৎ করে অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। আমি নিজেও আমার জমানো টাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

এ ব্যাপারে জনতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের যশোরের অফিস প্রধান (ম্যানেজার) কামরুজ্জামান রিপন বলেন, ‘আমি ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমার কোন দায় নেই। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।’ এরপরই তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আর প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর খন্দকার আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জনতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডে নামে এই প্রতিষ্ঠানটির যেখানে অফিস সেই ভবনের মালিক নাজির আহম্মেদ জানান, সাত বছর ধরে তারা এখানে ছিল। সপ্তাহ দুয়েক আগে ম্যানেজার ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের মধ্যে মতবিরোধ হয়। শুনেছিলাম তা ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু গত দুই দিন ধরে অফিস বন্ধ রয়েছে। অনেক গ্রাহক এসে অফিসে কাউকে না পেয়ে তার কাছে যোগাযোগ করছেন।’

(দ্য রিপোর্ট/এপি/এনআই/মার্চ ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর