নিবন্ধন থাকা না থাকা কোনো ইস্যু নয় : মওদুদ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হযে যাবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, এ প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘নিবন্ধন থাকুক আর না থাকুক, আমাদের কাছে এটি কোনো ইস্যু নয়। আমাদের ইস্যু হচ্ছে জনগণের অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এখন সেই গণতন্ত্র নাই যে স্বপ্ন একাত্তরে জনগণ দেখেছিল। এখন যে সংকট চলছে সেটি মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সংকট। সুতরাং ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনাই আমাদের সবচেয়ে বড় ইস্যু।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মওদুদ আহমেদ এ কথা বলেছেন। ‘মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভুমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’

বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘সরকারি দলের নেতারা ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কালকেও মাগুরায় ভোট চেয়েছেন।কিন্তু এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এই ভোটের প্রচারণার অধিকার বিএনপিকেও দিতে হবে। অর্থাৎ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যা বোঝায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সরকারি দল ভোটের প্রচারণা চালালেও বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা হয়রানি করা হচ্ছে। সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। সুতরাং এখনই বুঝতে পারছি, আগামী নির্বাচন আপনারা (আওয়ামী লীগ) কেমন করতে চান। কিন্তু বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে মামলা মোকাদ্দোমা দিয়ে সেই ধরনের একদলীয় নির্বাচন করার চেষ্টা করলে সেটি সুষ্ঠু হবে না। সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

মওদুদ আহমদ আরো বলেছেন, ‘এটা নিশ্চয় সরকারের কোনো কৌশল। দুরভিসন্ধিমূলক একটি স্ট্রেটেজি তারা (আওয়ামী লীগ) গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জঙ্গিবাদের কর্মকাণ্ডগুলো ফলাওভাবে প্রচার করে সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না।’

জঙ্গিবাদ ইস্যুকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা আরো বলেছেন, ‘এতে অনেক নিরীহ মানুষকে জঙ্গি অভিযানের নামে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, উপজেলা পর্যায়ে নাকি জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান পরিচালিত হবে। সেটি হলে ভুল হবে। কারণ, এই অভিযানের নামে পুলিশ-র‌্যাব সাধারণ মানুষকে হয়রানি করবে।’

বিএনপি জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছে দাবি করে মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইদের বিচারের আওতায় এনে আমরাই জঙ্গি নির্মূল করেছিলাম।বিএনপির আমলে এদের ফাঁসি হয়েছে। বিএনপিই জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছিল। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে।’

জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে চাইলে সব রাজনৈতিক দলসহ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘যারা সত্যিকার জঙ্গিবাদী, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। আমরা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করব। আর জঙ্গিবাদ যদি এতই জাতীয় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে একে দমন করতে র‌্যাব-পুলিশ একা পারবে না, সরকারের একার পক্ষে সম্ভব হবেনা, যদি দমন করতে হয়, জাতীয় পর্যায়ে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকার এই ধরনের পদক্ষেপ না নিলে বুঝতে হবে সরকার রাজনীতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যই জঙ্গিবাদকে জিইয়ে রাখছে।’

আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিউল আলম রাহীর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/জেডটি/মার্চ ২২, ২০১৭)