thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

বাড়ি দখলে দুর্বৃত্তদের হামলা, নারীর গর্ভের সন্তান মৃত

২০১৭ মার্চ ২২ ২৩:৫৪:৩০
বাড়ি দখলে দুর্বৃত্তদের হামলা, নারীর গর্ভের সন্তান মৃত

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার দক্ষিণ পাহাড়তলীতে বিরোধপূর্ণ একটি বসত ভিটা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি চক্র। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে দ্বিতীয়বারে মতো হামলা ও ভাঙচুর করেছে এ চক্র। দুর্বৃত্তদের এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে বাড়ির ভিতরে থাকা দুই গর্ভবতী নারী। তাদের মধ্যে একজনের গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিকেল ৩টার দিকে ২০/২৫ জনের দুর্বৃত্তদের একটি দল স্থানীয় ফজলুল হক সুমনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে দুই নারী ও তিনটি শিশু ছিল। দুর্বৃত্তরা পরিবারের পুরুষ সদস্যদের না পেয়ে বাড়ির ভিতরে থাকা ফয়জুন্নেসা পলি ও ফজলুল হকের স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌস ইমুর উপর হামলা চালায়। তারা দু’জনই সন্তানসম্ভবা ছিল। এ সময় ভয়ে শিশুরা খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। ঘটনার সময় দৃর্বত্তরা ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।

পরে প্রতিবেশীরা আহত দুই নারীকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে দুই নারীরই অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা আরও জানিয়েছেন, নির্যাতনের কারণে দুই নারীর একজনের গর্ভের সন্তান মারা গেছে। অপরজনের গর্ভের সন্তানও মারা গেছে বলে তারা ধারণা করছেন।

এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের ৩৩ নং ওয়ার্ডের গাইনী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রফেসর তাপসী বড়ুয়া দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘জান্নাতুন ফেরদৌস ইমুর তিন মাস বয়সী গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তবে ফয়জুন্নেসা পলির গর্ভের সন্তান মারা গেছে কিনা সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি এখনো। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব হবে। তবে আমরা ধারণা করছি, পলির গর্ভের সন্তানও মারা গেছে।’

হামলার শিকার হওয়া পরিবারটির সদস্যরা জানিয়েছেন, পাহাড়তলী এলাকার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক বছর যাবত জনৈক ফাহিম দক্ষিণ পাহাড়তলী হাজী আবদুল গনি রোডে সুমনের বাড়ি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গত ১৬ মার্চ রাত ৩টার দিকে একবার সন্ত্রাসীরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িটি দখল করার চেষ্টা চালায়।

এ সময় তারা বাড়ির মহিলাদরে উপর হামলা এবং বাড়ি ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে। পরবর্তীতে এ নিয়ে থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করা হয় আক্রান্ত পরিবারের পক্ষ থেকে।

মামলা দায়েরের বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার বিকেলে পুনরায় ফাহিম ও মাহাবুবেব নেতৃত্বে বাড়িটিতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়।

ওই পরিবারের সদস্য ফজলুল হক জানিয়েছেন, তাদের পৈত্রিক এ বসতভিটায় জায়গা দাবি করায় এ নিয়ে ফাহিমের সাথে বিরোধ তৈরি হয়। এতে আদালতে মামলা চলাবস্থায় গত ১৬ মার্চ গভীর রাতে প্রায় শতাধিক লোকজন নিয়ে বাড়িটিতে বেড়া দিয়ে দখল করতে যায় ফাহিম উদ্দিন আহমেদ। তারা একাধিক কাঁচা ঘর ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে নতুন ঘর দেওয়ার চেষ্টা করে।

হামলার সময় সুমনের পরিবারের সদস্যসহ ভাড়াটিয়ারা এসে বাঁধা দিলে তাদের উপরও আক্রমণ চালানো হয়। ঘরের জানালার কাঁচ ও সিসি ক্যামরা ভেঙ্গে ফেলা হয়।

সুমনের বোন পারভিন আক্তার বলেছেন, ‘রাজনৈতিক মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমার ভাইরা বাড়িছাড়া। ভাইয়েরা বাড়িতে না থাকার সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী ফাহিম উদ্দিন বাড়িটি দখলের চেষ্টা করছে। আমরা বাড়িটি বিভিন্ন মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। বাড়ির একটি অংশ আমরা ১৯৯৭ সালে আলী আহমদ গং কাছ থেকে ক্রয় করি। একই জায়গায় ২০০১ সালে একই মালিক থেকে ক্রয় করে ফাহিম উদ্দিন।মূলত সেই জায়গা নিয়ে তার সাথে আমাদের ঝামেলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে।’

এ ব্যাপারে জানতেঅভিযুক্ত ফাহিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এদিকে, বুধবারের হামলার বিষয়ে ডবলমুরিং থানা পুলিশের এসআই মো. কাওসার জানিয়েছেন, দু’পক্ষের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধে এ ঘটনা ঘটেছে। দুই নারী আহত হয়েছে শুনেছি। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/এনআই/মার্চ ২২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর