thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

‘জঙ্গিবাদ জিইয়ে রেখে ফায়দা হাসিল করতে চায় সরকার’

২০১৭ মার্চ ২৫ ১৩:০৫:৩৫
‘জঙ্গিবাদ জিইয়ে রেখে ফায়দা হাসিল করতে চায় সরকার’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সরকার জঙ্গিবাদের সমাধান চায় না এমন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা (বিএনপি) বারবার বলেছি জঙ্গিবাদ নিমূর্লে জাতীয় ঐক্যসৃষ্টি করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার এটা চায় না। বরং এটাকে জিইয়ে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়।

শনিবার (২৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।

প্রতিদিনের ঘটনায় প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে গত এক সপ্তাহে যে তিন-চারটি ঘটনা ঘটেছে, আত্মঘাতী বোমা হামলাও হয়েছে। অথচ সরকার এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্যে নিয়ে আসছেন না। সংশ্লিষ্ট এক একটি প্রতিষ্ঠান এক এক রকমের বক্তব্য দিচ্ছে। দেখতে পেয়েছি গতকালের (শুক্রবার) আত্মঘাতী, বোমা হামলার ঘটনায় একদিকে বলা হলো- এটার সঙ্গে আইএস, অন্যদিকে বলা হচ্ছে এই ঘটনা পূর্বের ঘটনার মতো নয়। কাজেই প্রশ্ন থেকে যায়, যে মানুষটি আত্মঘাতী বোমাতে নিহত হলো সে কি নিহত হওয়ার জন্যই আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে? তাই এ ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য বক্তব্য না আসলে জনগণের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হবেই।

তিনি বলেন, কোনো কিছু ঘটলেই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বিএনপিকে দোষারোপ করেন। অথচ জঙ্গিবাদের ভয়াবহতা অনুসন্ধান না করে, সঠিক সত্য উদঘাটন না করে যদি এ ধরনের উক্তি করা হয় এবং যাদেরকে এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে গ্রেফতার করে হত্যা করা হয় তাহলে কোনো দিন সত্য প্রকাশিত হবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি বারবার দাবি জানিয়েছে যে, জঙ্গিবাদের সঠিক সত্য বের করুন, কারা এই জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত এবং মদদ দিচ্ছে? কারণ জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মোকাবেলা করতে না পারলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐক্য তৈরি করুন। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মাসের পরপরই ভারত সফরে যাচ্ছেন। আমরা আশাবাদী ছিলাম যে, আমাদের পানির সমস্যা সমাধানের এজেন্ডা দেখতে পাবো। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা দেখছি না এবং আমরা জানি না, কি বিষয়ে আলোচনা হবে। কি চুক্তি হবে, কোন সমঝোতা স্মারক হবে। পত্রপত্রিকায় দেখছি সেখানে বলা হচ্ছে তিস্তার পানি চুক্তি হওয়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। তাহলে কি জন্য ভারত যাচ্ছেন তিনি(প্রধানমন্ত্রী)? আমরা কি ভারতকে সহায়তা করতে নাকি আমাদের সমস্যা সমাধান করতে যাচ্ছি? এখন যেটা আলোচনায় এসেছে, সামরিক চুক্তি। অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ধরনের সামরিক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয়। এবং এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। আর বিএনপি এ কারণেই বারবার বলছে, এখনও বলছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রবিরোধী কোনো চুক্তি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

২৫ মার্চরে গণহত্যাকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ মার্চে ভয়াবহ গণহত্যা ঘটেছিল। এবং হাজার হাজার মানুষকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হত্যা করেছিল। স্বাধীনতার যে দাবি উঠেছিল, মুক্তির যে দাবি উঠেছিল তাকে দাবিয়ে দিতেই এই গণহত্যা চালানো হয়। কিন্তু স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় এদেশের মানুষ দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। অথচ আজকে সেই বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই। এমনকি কয়েকদিন ধরে যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে করে মনে হয় বাংলাদেশের কোনো সরকার নেই।

আজকে বাংলাদেশের যে ভিত্তি তা জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করেছিলেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ লুণ্ঠন করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, জিয়াউর রহমান সেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্রে রূপ দিয়েছেন। অবরুদ্ধ অর্থনীতিকে সচল করেছেন। মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আজকের সরকার, আওয়ামী লীগ এবং কুচক্রীমহল জিয়াউর রহমানকে সঠিক মূল্যায়ন করতে চায় না বরং অবমাননা কর মন্তব্য করেন। অথচ ২৬ মার্চ যদি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন তাহলে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হতো কিনা, বলা যায় না। কারণ জাতি যেভাবে দিক নির্দেশনা শূন্য হয়ে পড়েছিল তখন কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব আহ্বান জানাননি।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার কাজে নিয়োজিত সংক্রান্ত ফ্লোরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বেশকিছুদিন আগে এই সেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে যায়। পত্রপত্রিকা মারফত জানতে পারলাম যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে ব্যাংকে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং বাইরে কেউ জড়িত রয়েছেন। তাই সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ তলায় অগ্নিসংযোগ দেয়া হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এমকে/এনআই/মার্চ ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর