thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

বাগেরহাটে ট্রলারডুবি : আরও এক নারীর লাশ উদ্ধার

২০১৭ মার্চ ২৯ ১৬:৪৯:১১
বাগেরহাটে ট্রলারডুবি : আরও এক নারীর লাশ উদ্ধার

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় রীনা বেগম (২২) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই নিয়ে মোট ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করা হলো। বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীর শ্রেণীখালি এলাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে।

রীনা বেগম মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালি গ্রামের হালিম হাওলাদারের মেয়ে। তার স্বামীর নাম নওয়াব আলী।

দুর্ঘটনার দ্বিতীয় দিন বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ট্রলারডুবির ঘটনায় নারী ও শিশুসহ এখনও অন্তত ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এদিকে নিখোঁজদের উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের খুলনা, বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ ও বরিশাল ইউনিটের চারটি দল অংশ নিয়েছে। এছাড়া নৌবাহীর ২টি ডুবরি দল ও কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে চালিয়ে যাচ্ছে।

খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক (এডি) লিয়াকত আলী দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুপুরে পানগুছি নদীর তিন কিলোমিটার উত্তরের শ্রেণীখালি এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় রীনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেন। তাকে তার স্বজনরা সনাক্ত করেছেন।

নিখোঁজদের মধ্যে যাদের নাম পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পল্লীমঙ্গল গ্রামের বাচ্চু শেখের দশ মাস বয়সী ছেলে রাহাত, একই উপজেলার বারুইখালি গ্রামে শহীদুলের স্ত্রী লাবনী (২০), কাছিরকাটা পোলেরহাট গ্রামের প্রয়াত কাসেম শেখের ছেলে মজিদ শেখ (৭৫), একই গ্রামের নাসিম শেখের ছেলে নাজমুল শেখ (৬), আলতি বুরুজবাড়িয়া গ্রামের গাফ্ফার হাওলাদারের ছেলে সুলতান হাওলাদার (৫৫), ফুলহাতা গ্রামের মহসিনের ছেলে হাসান (৬), চিংড়াখালি গ্রামের তবিবুর রহমানের স্ত্রী মুন্নি বেগম (৪০), কালিকাবাড়ি গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মো. রফিক, উত্তর সুতালড়ি গ্রামের আব্দুল আজিজের স্ত্রী কামরুন্নেছা (৫৮), বুরুজবাড়িয়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. আনছার হাওলাদার (৫০), ভাইজোড় গ্রামের কালামের স্ত্রী খাদিজা (৪০), বাশবাড়িয়া গ্রামের আলম চাপড়াশির স্ত্রী সালমা (৩০), তার ছেলে সাজ্জাদ (১৮ মাস), একই গ্রামের ইউনুস সরদারের স্ত্রী বিউটি (২৫) পার্শ্ববর্তী শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের নাহিদ ওরফে লিটনের স্ত্রী নাছিমা (৩৫), একই উপজেলার শামছুল হুদার ছেলে আবির (১৫), পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পশ্চিম বানিপাড়া গ্রামের খলিল তালুকদারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (২৮)

এদিকে ট্রলারডুবির ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজদের সন্ধান না পেয়ে নদী পাড়ে ভিড় করেছেন স্বজনেরা। উদ্ধারকারী বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি নিজেরাও ট্রলার নিয়ে নদীতে খুঁজে ফিরছেন তাদের নিখোঁজ হওয়া স্বজনদের।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাসানদল গ্রামের মিজানুর রহমান খোকন জানান, মঙ্গলবার সকালে আমার ভাবি আঠারো মাস বয়সী ছেলে সাজ্জাদকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে ট্রলারে করে মোরেলগঞ্জ বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ওই ট্রলার থেকে পড়ে তারা নিখোঁজ হন। আমরা এখনো তার কোন খোঁজ পাইনি।

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দাবাজারের বাসিন্দা মো. শাহজাহান জানান, বাগেরহাট থেকে আমার ভাবি, ভাতিজা আবির আল শামসকে (১৫) নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রলারডুবির ঘটনায় আমার ভাবি সাঁতরে উঠতে পারলেও ভাতিজা নিখোঁজ হয়। ২৪ ঘণ্টা পার হলেও তাকে এখনও খুঁজে পাইনি।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসে উপ-সহকারি পরিচালক (ডিএডি) মাসুদুর রহমান সরদার দ্য রিপোর্টকে জানান, বুধবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ জোরদার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি দলে ভাগ হয়ে পানগুছি নদীর বদনীভাঙ্গা থেকে ফুলহাতা পর্যন্ত তল্লাসি চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু নদীতে জোয়ার-ভাটা তীব্র স্রোতে রয়েছে তাই দুর্ঘটনাস্থল থেকে দুই পাশের ১০ কিলোমিটার জুড়ে তল্লশি করা হচ্ছে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। যতক্ষণ না তাদের পাওয়া যাচ্ছে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ছোলমবাড়িয়া খেয়াঘাট থেকে প্রায় ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে মোরেলগঞ্জ পুরাতন থানার ঘাটে যাওয়ার পথে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা মা-মেয়েসহ ৫ নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ১৭ জন ।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/মার্চ ২৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর