thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

‘জঙ্গি’ নাজিমের লাশ নিতে অস্বীকৃতি মা ও স্ত্রীর

২০১৭ এপ্রিল ০৪ ২০:০৩:৪৬
‘জঙ্গি’ নাজিমের লাশ নিতে অস্বীকৃতি মা ও স্ত্রীর

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার পৌর শহরের বড়হাট জঙ্গি আস্তানায় সোয়াটের অপারেশন ‘ম্যাক্সিমাস’ চলাকালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনায় জঙ্গি আশরাফুল আলম নাজিম নিহত হয়েছেন। তার লাশ সনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু নিহতের মা মনোয়ারা বেগম ও স্ত্রী পান্না বেগম লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে তারা দু’জনেই লাশটি সনাক্ত করেছেন।

তারা জানায়, দেশের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক কাজ করেছে তার কলঙ্কিত মরদেহ নিয়ে কলঙ্কের স্মৃতি বহন করতে চাই না আমরা। নাজিম সিলেটের আতিয়া মহলের পাশে বোমা বিস্ফোরণের সাথে জড়িত ছিল।

ওই বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদসহ ৭ জন।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল।

তিনি বলেন, নিহত আশরাফুল আলম নাজিমের ছবি ও মরদেহ আমরা স্বজনদের দেখিয়েছি। মরদেহ ও ছবি দেখে লাশটি শনাক্তের পর নাজিমের মা সেই মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এখন পর্যন্ত বড়হাটে নিহত বাকি দুই জঙ্গির পরিচয় এখনো সনাক্ত করা যায়নি। তবে ডিএনএ রিপোর্ট দেখে শিগগিরই তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও জানান, নিহত জঙ্গির মরদেহ শনাক্ত করতে তাঁর বাড়ী নোয়াখালির সোনাইমুড়ি উপজেলার কুমারখালি গ্রাম থেকে সকালে মৌলভীবাজারে আসেন নাজিমের মা মনোয়ারা বেগম এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোতাহার হোসেন ও তার স্ত্রী পান্না বেগম।

বড়হাটের ওই ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় পুলিশ বাদি হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে মঙ্গলবার সকালে একটি মামলা দায়ের করেছে।

এদিকে নাসিরপুর জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিহত ৭ জনের লাশ সনাক্ত করেও পরিবারের লোকজন লাশ না নেওয়ায় সোমবার রাতে মৌলভীবাজার পৌরসভার টিকরবাড়ী গোরস্তানে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশগুলো দাফন করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি মো. অকিল উদ্দিন বলেন, বড়হাটের এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বড়হাটের নিহত ৩ জঙ্গির লাশ পরিবার না নিলে পৌরসভা লাশগুলো দাফন করার ব্যবস্থা করবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৌলভীবাজারের বড়হাট ও নাসিরপুরে দুই জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। পরে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় সোয়াত, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, সিটিসিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার বিকেলে ঢাকা থেকে আসা সোয়াত দল প্রথমে নাসিরপুরের আস্তানায় অভিযান চালায় কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ওই দিন অপারেশন সমাপ্ত করতে পারেনি তারা। পরদিন বৃহস্পতিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে সফল হয় সোয়াত। অভিযানের সময় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিহত হয় নারী-শিশুসহ ৭ জন। এরপর শুক্রবার সকালেই বড়হাটের আস্তানায় অপারেশন ‘ম্যাক্সিমাস’ নামের আরেকটি অভিযান শুরু হয়। আলোকস্বল্পতার কারণে শুক্রবার অভিযানটি শেষ করতে না পেরে শনিবার সকাল থেকে ফের অভিযান শুরু করে সফল হয় সোয়াট। অভিযানের কোনো একসময় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বড়হাটেও তিনজন নিহত হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপ্রিল ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর