thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

সাংবাদিক এ বি এম মুসার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

২০১৭ এপ্রিল ০৯ ০৯:৪৯:৩২
সাংবাদিক এ বি এম মুসার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট এ বি এম মুসার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তিনি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠা ও আজীবন সদস্য। এ বি এম মুসা দীর্ঘ ৬৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে অনবদ্য অবদানের জন্য একুশে পদকসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরষ্কারে ভূষিত হন।

তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন ছিলেন।

এদিকে এ বি এম মুসার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রবিবার বাদ মাগরিব ঢাকার মোহাম্মদপুরের ৫/২ ইকবাল রোডের বাসায় পারিবারিকভাবে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এবিএম মূসা ১৯৩১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রামের গভ. মোসলেম হাই স্কুল, নোয়াখালী জিলা স্কুল, ফেনী কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। বিএ প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়েছেন চৌমুহনী কলেজ থেকে। কলেজে পড়াকালে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি চৌমুহনী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘কৈফিয়ত’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে। এ সময়ই জড়িয়ে পড়েন বাম রাজনীতিতে। নিয়মিত লিখতেন সাপ্তাহিক সংগ্রাম ও পাকিস্তান অবজারভারে।

এবিএম মূসা দীর্ঘ ৬৪ বছর সাংবাদিকতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফ থেকে তার সাংবাদিকতা কর্মজীবন শুরু। ওই বছর তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার ও বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তিনি অবজারভারে ফিরে যান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে তিনি রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক ও মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ বি এম মুসা ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে তিনি ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন।

২০০৪ সালের পয়লা অক্টোবর তিনি দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল পদত্যাগ করেন। জনপ্রিয় কলাম লেখক এবিএম মূসা একজন দর্শকপ্রিয় আলোচক এবং সংবাদ বিশ্লেষক হিসেবে বিভিন্ন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।

পারিবারিক জীবনে এবিএম মূসা তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক। স্ত্রী সেতারা মূসা এ দেশের নারী সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ। সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এবিএম মূসা বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে একুশে পদক (১৯৯৯), জেফারসন ফেলোশিপ (১৯৭০), কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়ন ফেলোশিপ (১৯৬১) উল্লেখযোগ্য।

এ বি এম মুসা ২০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি নানাবিধ বাধর্ক্যজ্বনিত রোগে ভুগছিলেন। তার হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক, ফুসফুস প্রভৃতিতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের শেষ ভাগে তিনি মাইলোডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোম আক্রান্ত হন। এর ফলে তার অস্থিমজ্জা বিনষ্টিতে আক্রান্ত হয়। এটি ক্যানসারের ন্যায় প্রাণহারী ব্যাধি। ২০১৪ সালের ২৯ শে মার্চ তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেহের রক্ত উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার। ১১ দিনে তার দেহে ২৪ ব্যাগ রক্ত সংবাহন করা হয়েছিল। ৯ এপিল (২০১৪) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ফেনীর গ্রামের বাড়ি কুতুবপুরে তাকে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এআরই/এপ্রিল ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর