thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

প্রতিরক্ষা স্মারক জনগণ মেনে নেবে না : রিজভী

২০১৭ এপ্রিল ০৯ ১২:৫৪:২৫
প্রতিরক্ষা স্মারক জনগণ মেনে নেবে না : রিজভী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বৃটিশ আমলে জমিদারি প্রথা ছিল। জমিদারি রক্ষা করার জন্য প্রতিবছর বৃটিশ শাসকদের কর দিতে হত। প্রতিবছর কর দিলেই জমিদারি টিকে থাকতো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি তাহলে দিল্লির কাছে কর দিতে গেলেন?

তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) সরকার নতজানু হয়ে যে প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক করেছে, জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এদেশের মানুষ কখনো এ চুক্তি মেনে নেবে না।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রবিবার সকালে বাংলাদেশ জাতীয় দল আয়োজিত এক মানববন্ধেনে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা গোপনীয়তাকে ভারতের কাছে উন্মোচন করে দিলেন। এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষার এক্সটেনশন হবে কিনা-আমরা সেটাই দেখতে পেলাম কালকে।

রিজভী আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সহযোগীতা করেছে, এটা আমরা স্বীকার করি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তাদের দয়ার দান। এটা তাদের স্বার্থেই করেছে তারা।

ভারত সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একজন ব্যক্তিকে তাবেদার করে রাখতে পারেন।একজন ব্যক্তি মানে কিন্তু দেশের জনগণ নয়। আপনারা বাংলাদেশের জনগণকে গুরুত্ব দেন না। আধিপত্যবাদী চরিত্র নিয়ে হাজির হন। শ্রীলঙ্কায় তামিলদের অস্ত্র দিয়েছেন, সিকিম আত্মসাৎ (দখল) করেছেন, ভুটানকে করার চেষ্টা করেছেন, নেপালকে চেষ্টা করেছিলেন-কিন্তু পারেননি। বাংলাদেশকেও পারবেন না।’

ভারত সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্মারকে সই করেছেন।কিসের সহযোগিতা? বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল, যে দল আপনাদের আনুগত্য করে। তার মানে তো এটা বাংলাদেশ নয়। এটা জনগণের সম্মতি নয়। আজকে সেই দল ভোট করে ক্ষমতায় নেই। দিল্লির নীতি নির্ধারকরা চেয়েছেন, প্রত্যক্ষভাবে আপনারা সহযোগিতা করেছেন। হস্তক্ষেপ করেছেন, আপনাদের পররাষ্ট্র সচিবকে পাঠিয়েছেন, আধিপত্যবাদী হস্তক্ষেপ করেছেন। কারণ আপনাদের পছন্দের দল ও শাসক আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চান। আপনারা সে কাজটি করেছেন।’

ভারতের কাছে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘কিসের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা? আপনারা আমাদের শান্তি বাহিনীকে অস্ত্র দেননি? তাদের আশ্রয় দেননি? বাংলাদেশকে অঙ্গচ্ছেদ করার জন্য পার্বত্যাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আপনারা অস্র দিয়েছেন। প্রতিদিন সীমান্তে মানুষ হত্যা করছেন। ফেলানীকে হত্যা করে কাটাতাঁরের বেড়ায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের আদালতে বিএসএফ-এর দায়ী সেই কর্মকর্তার কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা আপনারাই তো নষ্ট করেছেন। আপনারা বন্ধুত্ব করবেন দেশের সাথে, দেশের জনগণের সাথে। কিন্তু আপনারা বন্ধুত্ব করছেন একটি সরকারের সাথে, যার কোনো জনসমর্থন নেই। সেই সরকার তো টিকে থাকার জন্য আপনাদের কর দেবেই।’

বাংলাদেশ চীনের বলয়ে ঢুকে পড়ে কি না এ নিয়ে ভারতের যতো ভয় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ভারতের সাবেক এক সেনা প্রধান বলেছেন তাদের অস্ত্র সেঁকেলের। পৃথিবীর যে দেশ আধুনিক অস্ত্র বানায়, টেকনোলজি ভাল, তাদের সাথে চুক্তি হতে পারে। কিন্তু আপনাদের মতো সেঁকেলে অস্ত্র যারা আমদানি করেন, তাদের সাথে অস্ত্র উৎপাদনের কথা ভাওতাবাজি। এটা চক্রান্তের অংশ।

জনগণ চারিদিক থেকে ফুঁসে উঠেছে। যদি কেউ আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। কেউ যদি দেওয়াল ভাঙতে চায়, সেই দেওয়াল ভাঙার উপযুক্ত জবাব জনগণ দেবে।গতকাল সরকার নতজানু হয়ে যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে, জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছন। এদেশের মানুষ কখনো এ চুক্তি মেনে নেবে না।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম, গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএন আমিনুর রহমান, ডিএলএ মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবু নাছের মো. রহমতুল্লাহ, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এআরই/এপ্রিল ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর