thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

সিরাজগঞ্জের তাঁত কাপড়ের হাটে নানা সমস্যা

২০১৭ এপ্রিল ০৯ ১৮:৫৯:১৪
সিরাজগঞ্জের তাঁত কাপড়ের হাটে নানা সমস্যা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : তাঁতশিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের সর্ববৃহৎ সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর তাঁত কাপড়ের হাট। একদিকে মামলা-মোকদ্দমায় বিধ্বস্ত হাট কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন। অপরদিকে প্রভাবশালী ইজারাদারদের নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছেন এ হাটের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় ১০ হাজার তাঁতী ও তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী।

তাঁত কাপড় ব্যবসায়ীরা দাবি করে জানায়, সকল মামলা মোকদ্দমার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে এনায়েতপুর কাপড়ের হাটটি সমিতির নামে ইজারা দিলে সরকারের রাজস্ব পরিশোধ করার পরও প্রমিন্যান্স টেক্সটাইল কোম্পানির বিনিয়োগকৃত অর্থ সমিতিই ফেরত দিতে পারবে। এতে সরকারি কোষাগার থেকে বিনিয়োগকারী কোম্পানিকে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হবে না বলেও মনে করছে সমিতি কর্তৃপক্ষ।

এনায়েতপুর হাট তাঁত-কাপড় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষ থেকে মোকদ্দমা মীমাংসা করার মাধ্যমে তাঁতকাপড় ব্যবসা সম্প্রসারণের আদেশ প্রার্থনা করে প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করা লিখিত আবেদনে এনায়েতপুর হাট তাঁত-কাপড় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন।

তাঁতশিল্পের বিকাশ ও ক্ষুদ্র তাঁত কাপড় ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় নিবন্ধিত এ সমিতি গঠন করা হয়। এনায়েতপুর হাট সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য ওই সময় তৎকালীন সদিয়া চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী এনায়েতপুর হাটে ব্যবসারত প্রমিন্যান্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড কোম্পানির সাথে সমঝোতা চুক্তিপত্র করেন।

২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি চৌহালী উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় এনায়েতপুর তাঁত কাপড়ের হাটের জায়গা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবহৃত নিচু জায়গা পেরিফেরিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব পাশ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীর অর্থায়নে গভীর খাদ ভরাটের জন্য অনুমোদন দেন ভূমি মন্ত্রণালয়। ওই বছরই বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রমিন্যান্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড কোম্পানি নিজ অর্থায়নে গভীর খাদ ভরাট করে হাটের জায়গা সম্প্রসারণের করেন। তবে হাটের জায়গা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে প্রমিন্যান্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড কোম্পানির বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য এনায়েতপুর হাট তাঁত-কাপড় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় ১০ হাজার তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী চুক্তিবদ্ধ হয়।

আবেদনপত্রে আরও বলা হয়েছে, হাটটি পেরিফেরিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসন দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হচ্ছে। তবে বিনিয়োগকারী কোম্পানির বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত প্রদানে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে প্রমিন্যান্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড কোম্পানি তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য এনায়েতপুর হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, ভূমি মন্ত্রণালয়, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও অন্যান্যদের বিবাদি করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।

পরে রিটের শুনানি শেষে আদালত ২০০৮ সালের ১৯ আগস্ট আবেদনকারীর দাবি সেটেল করে টাকা ফেরত প্রদানের আদেশ দেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক ওই আদেশের বিরুদ্ধে এক বছর ৪ মাস পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লীভ টু আপিল ফাইল করা হয়। এনায়েতপুর হাটের নিয়োগকৃত ইজারাদার ও তার প্রভাবশালী সহযোগিরা হাটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর প্রতিনিয়ত উৎপাত ও অবৈধভাবে হাটের জায়গা দখল করে ব্যক্তিগত কার্যালয় নির্মাণ করেন। বাধ্য হয়ে সমিতির পক্ষ থেকে অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবিতে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক দখলদারদের উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়ে রুল নিষ্পত্তি করেন। ওই আদেশ আংশিক কার্যকর হলেও এখনও বেআইনিভাবে হাটের জায়গা দখল করে চলেছে কতিপয় প্রভাবশালীরা।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মামলা-মোকদ্দমা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এনায়েতপুর তাঁত কাপড়ের হাটটি মুখ থুবড়ে পড়ছে। আবাসিক হোটেল না থাকায় দূর থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। এলাকার তাঁত মালিক-শ্রমিক ও কাপড় ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে এনায়েতপুর তাঁত কাপড়ের হাটের বিনিয়োগকারীর অর্থ ফেরত প্রদান করত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে এ হাটের উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁতশিল্পের বিকাশ তরান্বিত করার দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে আমাদের আবেদনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করলে সরকারি কোষাগারে বিপুল অর্থ জমা হওয়ার পাশাপাশি লাইসেন্স ফি বাবদও প্রতি বছর সরকার অর্থ পেতে পারে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/এপ্রিল ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর