thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

নববর্ষ ভাতা পেলেন দ্য রিপোর্ট-সহ ১৪ গণমাধ্যমের কর্মীরা

২০১৭ এপ্রিল ১৩ ২২:৫৩:৫৮
নববর্ষ ভাতা পেলেন দ্য রিপোর্ট-সহ ১৪ গণমাধ্যমের কর্মীরা

কাওসার আজম, দ্য রিপোর্ট : দ্বিতীয় বছরের মতো এবারও মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা বা বোনাস পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বাঙালির এ সর্বজনীন উৎসব উদযাপনে সরকারের পাশাপাশি বেশকিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নববর্ষ ভাতা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি মিডিয়ার মালিকরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম-সহ ১৪টি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার কর্মীরা এবার নববর্ষ ভাতা পেয়েছেন। সাংবাদিকদের নববর্ষ ভাতা প্রদানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী মালিকপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা-বৈঠক করেছেন।

সোহেল হায়দার চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ডিইউজের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠি নিয়ে আমি বিভিন্ন মিডিয়ার মালিক ও সম্পাদকদের কাছে গেছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আপনাদের (দ্য রিপোর্ট) সম্পাদক এবং চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি বৈঠক করেছি।

আপনাদের দ্য রিপোর্টসহ ১৪টি মিডিয়া কর্তৃপক্ষ নববর্ষ ভাতা দিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। গত বছর প্রথমবার দৈনিক আমাদের অর্থনীতিসহ কয়েকটি গণমাধ্যম সাংবাদিকদের বৈশাখী ভাতা দিয়েছিল। এবার অনেকেই সাড়া দিয়েছেন।

তার দেওয়া তথ্য মতে দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, করতোয়া, ভোরের ডাক, নিউ নেশন, বণিকবার্তা, আমাদের সময়, ইত্তেফাক, একুশে টিভি, অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম, জাগোনিউজ, এবিনিউজ২৪.কম, স্বদেশ জমিন, নিউজ জি২৪.কম এবং সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস-এর কর্মীরা এবছর নববর্ষ ভাতা পেয়েছেন।

ইউনাইটেড মিডিয়া লিমিটেডের প্রতিষ্ঠান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম। যার মূল গ্রুপ হচ্ছে প্রাইম ফিন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমই শুধু নয়, প্রাইম ফিন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট-এর আওতাভুক্ত সকল সাবসিডিয়ারী এবং এসোসিয়েট প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই এবার নববর্ষ ভাতা পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, তিন বছর আগে আমরা বাংলা নববর্ষে উৎসব ভাতা প্রদানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে রিপোর্ট করেছিলাম। গত বছর সরকারিভাবে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ওই বছরই আমাদের দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো। কেননা এ বিষয়ে আমরাই অগ্রগামী ছিলাম। কিন্তু নানা কারণে দিতে পারিনি। এ বছর আমাদের প্রতিষ্ঠানের সংবাদকর্মীসহ সকল কর্মচারিকে উৎসব ভাতা দিতে পেরেছি। এটা আমার চাইতে আর কারো বেশী আনন্দ পাওয়ার কথা নয়। এজন্য আমাদের চেয়ারম্যান কাজী ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ধন্যবাদ।

তিনি বলেন, দ্য রিপোর্টসহ বিভিন্ন মিডিয়ার কর্মীদের নববর্ষ ভাতা পাওয়ার পেছনে ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি আমার সঙ্গে ও আমাদের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য মিডিয়ার সম্পাদক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এজন্য তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ প্রাপ্য।

এ ব্যাপারে সোহেল হায়দার চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, যেসব ‘যেসব প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এবার নববর্ষ ভাতা দিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা বৈশাখী ভাতা দেওয়া মিডিয়ার তালিকা তথ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেব।

ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এবার যারা (মিডিয়া) বৈশাখী ভাতা দেননি আগামীতে বাধ্যতামূলকভাবেই তাদের দিতে হবে। কারণ অচিরেই ৯ম ওয়েজবোর্ড ঘোষিত হবে। এ ওয়েজবোর্ডের কাঠামোতেই বৈশাখী ভাতার বিষয়টি থাকবে। ফলে তা আইন হয়ে যাবে এবং মিডিয়া কর্তৃপক্ষ তা মানতে বাধ্য হবেন।

২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারি করে সরকার। সেখানে সরকারি চাকরিজীবীদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে তথা বাংলা ১৪২৩ সাল থেকে নববর্ষ ভাতা প্রদান শুরু হয়েছে।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ভাতা প্রদানের বিষয়ে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম বরাবরই সোচ্চার ভূমিকায় রয়েছে। নববর্ষ ভাতা প্রদানের পক্ষে দ্য রিপোর্টে ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল ‘জোরদার হচ্ছে নববর্ষে উৎসব ভাতা ও ছুটি বৃদ্ধির দাবি’ এবং ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল ‘নববর্ষে উৎসব ভাতা দাবি’ শীর্ষক বিশেষ সংবাদ প্রকাশিত হয়।

২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল ‘জোরদার হচ্ছে নববর্ষে উৎসব ভাতা ও ছুটি বৃদ্ধির দাবি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বাংলা নববর্ষের ইতিবৃত্ত ও গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এ ব্যাপারে তখনজাতীয় পে-কমিশনের চেয়ারম্যান ড. ফরাসউদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেছিলেন, ‘বাংলা নববর্ষে উৎসব ভাতা দেওয়ার বিষয়টি কেউ তোলেনি। বিষয়টি যখন তুলেছেন, তখন আগামী পে-স্কেল ঘোষণার সময় ভেবে দেখা হবে। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’

একই বিষয়ে বেসরকারিখাতের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) তৎকালীন সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ দ্য রিপোর্টকে বলেছিলেন, ‘গত ২৪ বছর ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছি। বৈশাখে উৎসব ভাতা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা মাথায় আসেনি। বিষয়টি কেউ বলেওনি। আপনি বিষয়টি যখন তুলেছেন, তখন এটি নিয়ে ভাবা দরকার। কারণ বাংলা নববর্ষকে ঘিরে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বাড়ছে। উৎসব ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের অর্থনীতির চাকা আরও সমৃদ্ধ হবে। আগামীতে পে-কমিশনের সভায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে।’

২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল ‘নববর্ষে উৎসব ভাতা দাবি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরেও বিশিষ্টজনেরা দ্য রিপোর্টের কাছে বৈশাখী উৎসবের গুরুত্ব তুলে ধরে ভাতা প্রদানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ দ্য রিপোর্টকে বলেছিলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে অনেক সঙ্কট এখনো আছে। আমরা গরীব মানুষের জন্য এখনো শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারিনি। বর্ষবরণের মতো এমন একটি জাতীয় উৎসব উদযাপনে ভাতার ব্যবস্থা করা হলে ভাল হয়।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান দ্য রিপোর্টকে বলেছিলেন, বর্ষবরণ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। এ উৎসব উদযাপনে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকে না। আমি মনে করি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ভাতা দেওয়া উচিত। জাতীয় এই উৎসবকে ভাতা দিয়ে উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা গড়ে তোলা সম্ভব। আমার প্রতিষ্ঠানে আমি সামান্য ভাতা দিয়ে থাকি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দ্য রিপোর্টকে বলেছিলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ঐতিহ্য বাংলা বর্ষবরণ। এ উৎসব উদযাপনটাই বড় বিষয়। সেক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে উৎসব ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ভাতার ব্যবস্থা হলে ভালই হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এপি/এপ্রিল ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর