thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

৬৪ জেলায় সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণে প্রকল্প

বিভিন্ন ব্যয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রশ্ন

২০১৭ এপ্রিল ২০ ২২:০৭:৩১
বিভিন্ন ব্যয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রশ্ন

দেশের ৬৪ জেলায় সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনাতেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। এসব ক্ষেত্রে কোনো কোনোটির ব্যয় বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলেও জানা গেছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩০ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

আগামী ২৪ এপ্রিল প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হবে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে সংশোধনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।

আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘এখনই বিষয়টি সম্পর্কে বলা যাবে না। পিইসি সভা হলে সেখানে আলোচনার পর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধনের জন্য পাঠানো হবে। তারপর সংশোধন হয়ে আসলে একনেকে তা উপস্থাপনের সুপারিশ করা হবে।’

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদফতরের উপকারভোগী জনগোষ্ঠীকে অধিকতর উন্নত সেবা প্রদান, জেলা পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য যথাযথ স্থান সংকুলানের মাধ্যমে কাজের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতাধীন কার্যক্রম সুস্পষ্টভাবে বাস্তবায়নের জন্য দেশের সব জেলাতেই একটি করে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে সমাজসেবা অধিদফতরের। প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে খতিয়ে দেখছে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের যেসব ব্যয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে-প্রকল্পের পূর্ত কাজের প্রাক্কলনে প্রতিটি কমপ্লেক্সের জন্য আরসিসি পানির ট্যাঙ্ক বাবদ ৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ পানি সরবরাহ খাতে ২৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা ও ৩৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সিস্টেম খাতে ২০ লাখ টাকা, কনফারেন্স সিস্টেমে ১০ লাখ, সাউন্ড সিস্টেমে ৬ লাখ টাকা এবং পিএবিএক্স সিস্টেম খাতে ৫ লাখ টাকা করে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব ব্যয় অতিরিক্ত বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। এসব খাতের ব্যয় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের সুপারিশ করা হবে আগামী পিইসি সভায়।

এ ছাড়া অপরিহার্য না হলে প্রকল্প থেকে ৪০ কেভি জেনারেটর বাবদ ২১ লাখ টাকা, সোলার প্যানেল বাবদ ১২ লাখ টাকা, বাস এবং প্রকল্পভুক্ত সকল এলাকায় গ্যাস না থাকায় শুধুমাত্র যেখানে গ্যাস আছে সেখানে গ্যাস কানেকশন ব্যয় রাখা এবং প্রকল্পে কন্টিনজেন্সি ব্যয় ধরা থাকায় পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলন হতে কন্টিনজেন্সি ব্যয় প্রতিটি কমপ্লেক্স-এর জন্য ৫ লাখ টাকা করে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করতে যাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন।

অন্যদিকে, প্রকল্প পরিচালকের অফিসের জন্য ৮টি কম্পিউটার ও প্রতিটি অফিসের জন্য ১৫টি করে কম্পিউটার, প্রকল্প পরিচালকের অফিসের জন্য ৬ টন করে প্রতিটি কমপ্লেক্সের জন্য ২০ টন এসি ধরা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পরিমাণ ও ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব অংশের ব্যয় ও পরিমাণ যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া ২৩টি ফটোকপিয়ারের জন্য ১১১টি ফটোকপিয়ার টেবিলের প্রয়োজনীয়তা সভায় আলোচনা করা হবে। একই সঙ্গে আসবাবপত্র ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ ১০ লাখ টাকা করে এবং দাফতরিক বই বাবদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এসব ব্যয়ের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের পূর্ত নির্মাণের খসড়া ব্যয় প্রাক্কলনে প্রতিটি জেলা ভবনের জন্য আয়তন একই হলেও (উপকূলীয় এলাকা ব্যতীত) বিভিন্ন এলাকার পূর্ত নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে তারতম্য রয়েছে। এ ছাড়া ভবনের নকশায় প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো র‌্যাম্পের ব্যবস্থা নেই। এসব বিষয়ে পিইসি সভায় আলোচনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/জেডটি/এনআই/এপ্রিল ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর