thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে জমা দুইশ’ কোটি টাকা’

২০১৭ এপ্রিল ২৩ ১৭:২৩:০৪
‘শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে জমা দুইশ’ কোটি টাকা’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে দুইশ’ কোটি টাকার উপরে জমা আছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব খন্দকার মোস্তান হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে ২০১৩ সালে জমা ছিল মাত্র ৪২ লাখ টাকা। বর্তমানে ২০০ কোটি টাকারও বেশি জমা আছে। প্রতিদিনই এ ফান্ডে টাকা জমা হচ্ছে।’

সাভারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার চতুর্থ বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে রবিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে ব্র্যাক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেছেন।

রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর শ্রমিক ফান্ডে টাকা জমার পরিমাণ বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, কোনো শ্রমিক মারা গেলে এ ফান্ড থেকে ২ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়ে থাকে।

ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারপারসন ড. আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির পরিচালক গওহার নঈম ওয়ারার সঞ্চালনায় আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অফিদফতরের যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. আনোয়ার উল্লাহ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)-এর নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, রানা প্লাজা ক্লেইমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সিনিয়র পর্যবেক্ষণ ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওসার প্রমুখ।

অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেছেন, ‘২০১৩ সালের ২৪ মে সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল না। এটা ছিল মানুষ সৃষ্ট দুর্ঘটনা। ভবন মালিক ও গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের লোভ ও উদাসীনতার ফলে রানা প্লাজা ট্রাজেডির ঘটনা ঘটেছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনার আগের দিন রানা প্লাজার ভবন থেকে ব্রাক ব্যাংকের কাগজপত্র ও সরঞ্জমাদি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। ওই দিন শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ঢুকতে চাননি। কিন্তু কর্মে যোগদান না করলে চাকরি থাকবে না, বেতন আটকে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। নিরুপায় হয়ে কর্মীরা কাজে যোগ দেয়।’

এই অর্থনীতিবিদ আরো বলেছেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনা আমাদের ঘুম ভাঙানোর কল ছিল। এটি না ঘটলে হয়তো গার্মেন্টস সেক্টরে বর্তমানে যে সংস্কার হচ্ছে তা হতো না।’

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সাভারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত। এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের গঠিত কমিটির সুপারিশও ‘আইনি সুরাহা’ না হওয়ায় বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আলোচিত সাভার দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য সকল শিল্প কারখানায় কর্মরত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে বিকল্প ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।

ব্র্যাকের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে এক হাজার ১৩৪ জন নিহত ও দুই সহস্রাধিক শ্রমিক আহত হন। দুর্ঘটনার পর পঙ্গু ও আহতদের সাহায্যার্থে ব্র্যাক এ পর্যন্ত গুরুতর আহত ১৬০ জনকে মেডিকেল সহায়তা, মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত ৭৪৩ জনকে মনোসামাজিক সহায়তা, বিভিন্ন ব্যক্তিকে জীবিকার সহায়তা হিসেবে উৎসাহমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা আর্থিক সমস্যায় আছেন তাদের মধ্যে ৩৩০ জনকে মাসিক সঞ্চয় তহবিল প্রদান করা হয়। এই ৩৩০ জনের মধ্যে ১৩৬ জনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ ৬৫ হাজার টাকা এবং ১৯৪ জনকে এক লাখ টাকা ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

আলোচনা সভায় ক্ষতিগ্রস্তদের ‘ন্যায্য ক্ষতিপূরণ’ প্রদান, আহতদের যথাযথ পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণকে শুধু আর্থিক অঙ্কে বিবেচনা না করে শ্রমিকের আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক বিষয়গুলোও চিন্তা করা, যারা বেঁচে গেছেন অথচ বেকার তাদেরকে বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/জেডটি/এপ্রিল ২৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর