thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

জবির ক্যান্টিন সঙ্কট

সোমবার থেকে আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

২০১৭ এপ্রিল ২৩ ২২:৩৩:১৯
সোমবার থেকে আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যান্টিন সঙ্কট নিরসনে প্রশাসনের দেয়া দুই মাস সময় অতিবাহিত হলেও জবির ক্যান্টিন সঙ্কট নিরসনে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই সোমবার (২৪ এপ্রিল) থেকে আবার আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যান্টিনে খাবারের দাম কমানো ও মান বাড়ানো এবং ক্যান্টিনে ভর্তুকি বাড়ানোসহ বিভিন্ন সমস্য সমাধানের দাবিতে মাঠে নেমেছিল জবি শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ক্যান্টিন সঙ্কট নিরসনে করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসে জবি প্রশাসন। সভায় ক্যান্টিন সঙ্কট নিরসনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক
সেলিম ভূইয়াকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি করা হয় তখন। কমিটিকে দু’সপ্তাহের মধ্যে ক্যান্টিন সমস্যা নিরসন ও তার সমাধান খুঁজে বের করার জন্য সময় বেঁধে দেন উপাচার্য। তবে ওই মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেলিম ভূইয়া উপাচার্যের কাছে দু-মাস সময় চান। উপাচার্য সময় মঞ্জুর করার পর প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও এ কমিটি কোনো মিটিং করতে ছাত্রদের ডাকেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি বরং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সাথে কথা বলতে বলেন।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, জবি উপাচার্য দুই সপ্তাহের মধ্যে করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদন জমা দিতে সংশ্লিষ্টদের একটি কমিটি করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় (বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ক্যান্টিনের পদ্ধতি নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত অবকাশ ভবনের ক্যান্টিনের অবস্থা নিয়েও সার্বিক আলোচনা হয়। আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ ছাত্রলীগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট দুই অংশের প্রতিনিধি হিসেবে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা অংশ নিয়েছিলেন।

এদিকে, বৈঠকের আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখাতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্টিন সমস্যা সমাধানের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রনেতারা।

এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্টিনে স্বল্পমূল্যে ভাত ডালসহ খাবারের মান বাড়ানোর দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের পরে প্রশাসন আমাদের বলেছিল, দুই মাসের মধ্যে ডাকসু ক্যান্টিনের মূল্যের এবং মানের খাবার পরিবেশন করবে। কিন্তু, দু’মাস পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আমরা আগামীকাল(সোমবার) থেকে আবারও আন্দোলনে যাচ্ছি। তবে এবার আশ্বাস নয়, অধিকার আদায় করেই ফিরবো।’

এ বিষয়ে ক্যান্টিনের পরিচালক আমজাদ হোসেন বলেছেন, ‘ভিসি স্যার ছাত্রদের নিয়ে মিটিং করার পর আর কোনো মিটিং হয়নি। এরপর ছাত্রকল্যাণ পরিচালক শফিক স্যার তার অফিসে একদিন ডেকেছিলেন। তিনি আমাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্টিনের খাবারের দামের তালিকা দিতে বলেন। আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটি ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির খাবারের তালিকা সংগ্রহ করে তা জমা দিয়েছি।’

ক্যান্টিনের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির ফল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষে সাদা ভাতের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। কারণ ভাতের ব্যবস্থা করার জন্য যা প্রয়োজন তা আমাদের সাধ্যের বাইরে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমি চেষ্টা চালাচ্ছি খাবারের দাম কমানো সম্ভব না হলেও মান বাড়ানোর।’

প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্র কল্যাণের পরিচালক সফিকুল ইসলাম ‌‘প্রতিবেদনটা কাকে দেবো?’ বলে দ্যা রিপোর্ট এর কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দেন।

উপাচার্য প্রতিবেদন দিতে বলেছিল বললে, তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ চলছে। ট্রেজারার স্যারকে প্রধান করে আরও ৪ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।’

তবে কতদিন সময় লাগবে? জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক বলেন, ‘কতদিন লাগবে তা কিভাবে বলবো? উন্নয়ন তো একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এ সময় কি নির্ধারণ করা যায়? আপনি এসে দেখেন, ক্যান্টিনে কাজ হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক শ’ বছরের পুরনো, অথচ সেটিরও উন্নয়ন কাজ এখনও চালাতে হচ্ছে।’

এদিকে এ প্রসঙ্গে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, ‘আমি বৈঠকে বলেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন যেভাবে চলছে, এ থেকে খাবারের তালিকাসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে এটার জন্য একটি সুপারিশ প্রণয়ন করতে। এটার কাজ করছে ওরা, আমি এখনও হাতে পাইনি।’

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এনআই/এপ্রিল ২৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর