thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

অনুমতি ছাড়া মাছ আমদানিতে জেল-জরিমানা

২০১৭ এপ্রিল ২৪ ১৭:৫০:১২
অনুমতি ছাড়া মাছ আমদানিতে জেল-জরিমানা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মাছ, মাছের পোনা, রেণু আমদানির মাধ্যমে দেশে রোগজীবাণু বা ক্ষতিকর কিছু প্রবেশ রোধে ‘মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন- ২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এ আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ও পূর্ব অনুমতি ছাড়া মাছ, মাছের পোনা, রেণু ও উপকারী জীবাণু আমদানি করলে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।

সচিবালয়ে সোমবার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, ‘এটা একটা নতুন আইন। বিভিন্ন দেশ থেকে মৎস্য পোনা, রেণু আমদানি করা হয়। সেগুলোতে যেন রোগজীবাণু বা ক্ষতিকর কিছু না থাকে সেজন্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এ আইন করার বিষয়টি এসেছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের দেশে যেসব মৎস্য জাতীয় প্রাণী আসা নিষিদ্ধ সেগুলো যেন না আসে। যেমন-পিরানহা, আফ্রিকান মাগুর এগুলো আনা আমাদের আইনে নিষিদ্ধ। যদি ভুলক্রমে চলে আসে তবে এ আইন প্রটেকশন দেবে।’

শফিউল আলম বলেছেন, ‘আইনে সঙ্গনিরোধের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, মৎস্যরোগের প্রাদুর্ভাব বা বিস্তার রোধে আমদানির মাধ্যমে আনা মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবানু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি পৃথকীকরণ এবং পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত কোনো স্থান বা আঙিনায় মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অন্তরীণ বা পর্যবেক্ষণে রাখাই হচ্ছে সঙ্গনিরোধ।’

তিনি জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের আমদানি অনুমতি ছাড়া কোনো আমদানিকারক বাংলাদেশের ভেতরে মৎস্য, মৎস্যপণ্য বা উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি আমদানি করতে পারবে না। ভবিষ্যতে বিদেশ থেকে মাছ আনতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, ‘খসড়া আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও পূর্ব অনুমতি ছাড়া মৎস্য, মৎস্যপণ্য বা উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি বাংলাদেশে কেউ আমদানি করলে তিনি দোষী হবেন। এটা অপরাধের মধ্যে পড়বে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘কেউ নিষিদ্ধ মৎস্য, মৎস্যপণ্য বা উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি উৎপাদন করা, স্বত্ত্বাধীকারী হওয়া, দখলে রাখা, মজুদ করা, বহন করা, বিক্রয় করা, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন প্রচার, বিতরণ বা পরিবহন করলেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ সব অপরাধের জন্য শাস্তি সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড।’

এ ছাড়া প্রস্তাবিত আইনের অন্যান্য বিধান লঙ্ঘনেও একই শাস্তি পেতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

খসড়া আইনে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিসদ সচিব বলেছেন, ‘মৎস্য অধিদফতর এই কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে। মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হবে এ কর্তৃপক্ষের প্রধান।’

আমদানির অনুমতি, মৎস্য বিষয়ক সনদপত্র গ্রহণ, সংশোধন ও বাতিল এগুলোর এখতিয়ার কর্তৃপক্ষের উপর দেওয়া আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শফিউল আলম বলেছেন, ‘সরকার জনস্বার্থে সময়ে সময়ে মৎস্য, মৎস্যপণ্য বা উপকারী জীবাণুর আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘মৎস্য সঙ্গনিরোধের বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ দিতে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মৎস্য সঙ্গনিরোধ কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করতে পারবে।এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত বন্দরে মৎস্য সঙ্গনিরোধ স্টেশন করতে পারবে।’

শফিউল আলম বলেছেন, ‘কোনো পুকুর, দীঘি বা জলাশয়ে বা কোনো আঙ্গিনায় মৎস্য সঙ্গনিরোধ বিষয়ক রোগ-জীবাণু হিসেবে পরিচিত বা অনুমিত রোগ-জীবাণু পাওয়ার ক্ষেত্রে মালিককে নিকটস্থ মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।’

এ আইনের অধীনে অপরাধের জন্য পুলিশ সরাসরি গ্রেফতার করতে পারবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, ‘তা আবার জামিনযোগ্য হবে। বিচারিক আদালতের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতও এ আইনের অধীনে করা অপরাধের বিচার করতে পারবে।’

এখন বিদেশ থেকে আসা মাছ সঙ্গনিরোধ করা হচ্ছে কীনা-জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘এখন যে বিদেশ থেকে মাছ আসছে তা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় চেক করা হয়। এখন সেটা কার্যকর করার জন্য এই আইনটি হচ্ছে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/জেডটি/এপ্রিল ২৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর