thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

ধানে ‘নেক ব্লাস্ট’, হতাশ কৃষক

২০১৭ এপ্রিল ২৭ ১৩:০৩:৪৮
ধানে ‘নেক ব্লাস্ট’, হতাশ কৃষক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ধানের শিষ বের হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান পাকা শুরু হবে। সেই ধান কেটে ঘরে তুলবেন কৃষক। ধান ঘরে উঠলে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তামুক্ত হবেন কৃষকরা। কিন্তু হঠাৎ করেই ধানক্ষেতে কারেন্ট পোকা (‘নেক ব্লাস্ট’ রোগ) আক্রমণ করায় দিশেহারা হয়েছে পড়েছেন উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের কৃষকেরা।

পাঁচটি উপজেলা নিয়ে লালমনিরহাট জেলা। কমবেশি সব উপজেলায় ধানক্ষেতে ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগ দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার বাড়াইপাড়া গ্রামের মামান নামের এক কৃষক বলেন, ধানক্ষেতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করায় আমরা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছি গরুর খাবারের জন্য। একই উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের বাসিন্দা সাজু বলেন, আমার প্রায় এক বিঘা জমির ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ওই জমি থেকে আমি একটি টাকাও আয় করতে পারব না। ওই জমিতে যত টাকা খরচ করেছি তা পুরো লোকসান হবে।

এদিকে, জেলা সদরের বাসিন্দা আখতারুল আলম বাবলা বলেন, ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগের কারণে আমার প্রায় ১২ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলার বাসিন্দা রেশমা বেগম বলেন, আমার প্রায় ছয় বিঘা জমির ধান কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি গরিব মানুষ কী করব ভেবে পাচ্ছি না। এই জমির ধান দিয়ে যে চাল হতো তা আমার ১২ মাসের খাবার হতো। এখন আমি কী খাব ভেবে পাচ্ছি না। একই কথা বলেন, মহর উদ্দিন, ইউনুস আলী, হরেজ উদ্দিনসহ আরও অনেক কৃষক।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, নেক ব্লাস্ট ছত্রাক জাতীয় রোগ। বৈরী আবহাওয়ার কারণেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ধানগাছ এ রোগে আক্রান্ত হলে ধানের ৭০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে যায়। নেক ব্লাস্ট রোগে প্রথমত ধানগাছের পাতায় চোখের মতো দাগ দেখা যায়। পরে গিট, গোড়া ও দানায় আক্রান্ত হয়। পাতার রং সাদা হয়ে যায় ও ভিজে দাগ ধরে। ধানের শিষের চিটা হয় এবং ধানগাছ মারা যায়। তিনি আরও বলেন, ধানের শিষ বের হওয়ার আগেই জমিতে ফিলিয়া, এমিস্টার টপ, ট্রপার, নাটিভো জাতীয় তরল কীটনাশক ব্যবহার করলে এ রোগ থেকে ধানক্ষেত অনেকটা রক্ষা করা সম্ভব।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি অফিস সহকারী জহরুল বলেন, এ বছর বোরো ধানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, ৫১ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমি। আর লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৫০ হাজার ৮৫ হেক্টর জমি। গত বছর বোরো ধানের লক্ষমাত্রা ছিল, ৫১ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমি। আর লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছিল ৫০ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমি।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি অফিসের আর এক সহকারী খোরশেদ আলম বলেন, নেক ব্লাস্ট রোগ আট দশমিক ৫০ হেক্টর জমির তথ্য এখনো পর্যন্ত পাওয়া গেছে। প্রতিদিন খোঁজখবর নিয়ে তথ্য আপডেট করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপপরিচালক বিদু ভূষণ রায় বলেন, নেক ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে চাষীদের ছত্রাক জাতীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আমি প্রতিদিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছি।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এস/এনআই/এপ্রিল ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর