thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সুন্দরবনের ২৫ বনদস্যুকে থানায় হস্তান্তর

২০১৭ এপ্রিল ২৯ ২১:৪৩:০৩
সুন্দরবনের ২৫ বনদস্যুকে থানায় হস্তান্তর

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনের আত্মসমর্পণকৃত বনদস্যু আলিফ ও কবিরাজ বহিনীর দুই প্রধানসহ ২৫ সদস্যেকে দস্যুতা ও অস্ত্র আইনে মামলা দিয়ে শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-৮ এর ডিএডি মো. আমজাদ হোসেন বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

এর আগে একইদিন সকালে পটুয়াখালীর শিল্পকলা একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১শ ১০ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বনদস্যু আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ সদস্য আত্মসমর্পণ করে।

আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক মো. বেনেজীর আহমেদ এবং র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আনোয়ার উজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ নিয়ে গত ১১ মাসে সুন্দরবনকে ঘিরে দস্যুতায় লিপ্ত ১২টি বনদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করল।

শরণখোলা থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও দস্যুতা মামলায় আটক দেখানো হয়েছে বনদস্যু আলিফ বাহিনীর প্রধান আলিফ মোল্লা ওরফে দয়াল (৪২), রেজাউল ইসলাম শেখ ওরফে ছোট (২৮), সফিনুর রহমান সফি (২০), আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ওরফে আব্দুল্লাহ (৪০), হযরত আলী (৩৮), শাহিনুর আলম ওরফে শাহিন (২৯), জামির আলী জামু (৪৬), আলামিন মোল্লা (৩৫), তাইজেল ওরফে বড় ভাই (২৭), সিরাজুল ইসলাম ওরফে সুমন (৪১), আলমগীর গাজী (২৬), কামাল শেখ (৩৮), হোসেন আলী শেখ ওরফে ভাগ্নে (২৮), সেলিম মোড়ল (৩৯), হযরত আলী গাইন ওরফে আগুল কাটা হযরত (৩৯), পিয়ার আলী (৩৭), লিটন বিশ্বাস ওরফে দেওয়ান (৩২), হাবিবুর রহমান ওরফে বাছা (২৭), এনামুল গাজি ওরফে এনা (৩৫)।

এছাড়া কবিরাজ বাহিনীর প্রধান ইউনুস আলী ওরফে কবিরাজ ওরফে লাদেন (৩৮), নাজিম শেখ (৪৮), আফতাব উদ্দিন ফকির ওরফে বেয়াই (৩৩), আবু শেখ (৪৬), সেলিম হাওলাদার (৩০), আশরাফ হোসেম ওরফে রাজু (৩৭)।

আত্মসমর্পণকৃত এসব বনদস্যুদের বাড়ি বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

গত বছরের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘মাস্টার বাহিনীর’ ১০ জন বনদস্যু ৫২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ৩ হাজার ৯০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। তার ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুলাই বনদস্যু ‘মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর’ ১১ জন দস্যু ২৫ টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ২০ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর বনদস্যু ‘আলম ও শান্ত বাহিনীর’ ১৪ জন বনদস্যু ২০ টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সর্বমোট ১ হাজার ৮ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়। ১৯ অক্টোবর সাগর বাহিনী ১৩ সদস্য ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৯৬ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। গত ২৮ নভেম্বর খোকাবাবু বাহিনীর ১২ সদস্য ২২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৩ রাউন্ড গোলাবারুল’সহ আত্মসমর্পণ করে। ৭ জানুয়ারি নোয়া বাহিনীর ১২ সদস্য ২৫টি অস্ত্র ও এক হাজার একশ পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ২৯ জানুয়ারি বনদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ সদস্য ৩১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। ৩০ মার্চ ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্য ২১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ২৩৭ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। সর্বশেষ শনিবার সকালে আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ সদস্য ৩১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১শ ১০ রাউন্ড গুলিসহ দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণ করল।

দীর্ঘদিন আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের মংলা, হারবাড়িয়া ও শিবসা এলাকায় জেলেদের মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ, ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলো বলে র‌্যাব জানায়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপ্রিল ২৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর