ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর আ’লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. ইসমাইল হোসেনের (৪৮) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে, মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে স্ট্যাটাস দিয়ে গেছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের পালকি আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ইসমাইলের লাশ। পরে তা উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে রাজনৈতিক কোন্দালের জেরে মানসিক চাপে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

এদিকে মৃত্যুর আগে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব অধ্যাপক শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চারটি রাজনৈতিক স্ট্যাটাস দেন পদবঞ্চিত এই আওয়ামী লীগ নেতা।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘শফিউল্লাহ পাপ, অন্যায় করতে টাকা খরচ হয় তোমার নোংরামি তুমি বন্ধ করবে? জানি, তুমি সংগঠনের চরম ক্ষতি করছো, তোমার মধ্যে দেশপ্রেম নেই, বাইশারির দুই জন সাংবাদিক জানে তুমি আমাকে হুমকি দিয়েছো। মনে রেখো নেতৃত্ব তুমি পাবে না। তোমার পূর্ব পুরুষের ইতিহাস সবাই জানে। হুমকি দিয়ে লাভ নাই। কারণ তুমি অবৈধ টাকার মালিক। ৭১ এর চেতনা তোমার নাই। আমি গরব হতে পারি, নীতিহীন নই।’

নিহত ইসমাইলের স্ত্রী জোসনা আক্তার জানিয়েছেন, আত্মহত্যা করার মত পারিবারিক কোন অশান্তি ছিল না তার আর তার স্বামী মধ্যে। তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক শফিউল্লাহ কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, ‘কক্সবাজারের একটি হোটেল ইসমাইলের আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। আমি গভীরভাবে শোকাহত।’

এসময় ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে শফিউল্লাহ বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল না। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার দূরত্ব ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দূরত্বটা অনেকাংশে কমেছে। তাকে হুমকি দেওয়ার কথাটি সত্য নয়। এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) কামরুল আজম জানিয়েছেন, কক্সবাজারের আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে এক আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশের খবর পাওয়ার পর সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেল ম্যানেজার ও রুমবয়কে আটক করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এপি/এনআই/এপ্রিল ৩০, ২০১৭)