thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

মাহে রমজান

২০১৭ মে ১৩ ১৪:৪২:৪০
মাহে রমজান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : চান্দ্র বছরের সাবান মাসের পর আসে মাহে রমজান। আর এর আগমনীবার্তা প্রত্যেক মুসলমানের দরজায় কড়া নাড়ছে। রমজানের সিয়াম সম্বন্ধে আমরা কমবেশি সবাই জানি। তবুও আলোচনার মেজাজে জেনে নিই দু’চার কথা।

রমজান বা রোজা কি? রমজ শব্দের অর্থ পুড়িয়ে ফেলা। অর্থাৎ একজন মুমিনের জীবনে যা আল্লাহর পছন্দ নয় তা সিয়ামের আগুনে পুড়য়ে ফেলাই রমজানের প্রধান উদ্দেশ্য।

রোজা শব্দটি ফার্সি শব্দ। আমরা আরবী শব্দ থেকে বলছি সিয়াম অর্থ হচ্ছে রোজা। সিয়াম শব্দটি এসেছে সাওম থেকে যার অর্থ বিরত থাকা। পারিভাষিক অর্থে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্ব প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকা । রোজা কার জন্য ফরজ?

রোজা কাদের উপরে ফরজ সে বিষয়ে জেনে নিই:

* মুসলমান হওয়া : মুসলিম ব্যক্তির জন্য রোজা রাখা ফরজ। রোজা কোন অমুসলিমের জন্য ফরজ নয়।

* বালেগ হওয়া : নাবালকের ওপর রোজা ফরজ নয়, অর্থাৎ ১২ বছর বয়সের কম বয়স হলে রোজা ফরজ হবে না।

* সুস্থ হওয়া : শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রোজা রাখার নিয়ম নাই। তবে সাধারণ অসুখ বিসুখ হলে যদি সে রোজা রাখার উপযোগী হয় তবে সে রোজা রাখতে পারবে।

* সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া : পাগলের ওপর রোজা ফরজ নয়।

* স্বাধীন হওয়া : পরাধীন নয় এমন ব্যক্তির উপর রোজা ফরজ।

* সজ্ঞান হওয়া : সজ্ঞান ব্যক্তির উপর রোজা ফরজ।

* মুকিম হওয়া : অর্থাৎ অস্তায়ীবাসিন্দাদের উপর রোজা ফরজ নয়।

এছাড়া মুসাফিরের ওপর রোজা ফরজের ব্যাপারে একটু ভিন্নতা আছে। যেমন কষ্টসাধ্য ভ্রমণ হলে পরবর্তীতে রোজা আদায়ের বিধান আছে।

রোজা ফরজ হওয়ার দলিল : পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন-

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। [২:১৮৩]

চন্দ্র গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশির সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। [২:১৮৪]

ঈমানদারগণকে উদ্দেশ করে আল্লহতায়ালা রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। রোজা হলো একমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য পানাহার ও যৌনাচার হতে বিরত থাকা। এর দ্বারা আত্মার পরিশুদ্ধি ও স্বভাবের পরিমার্জনা অর্জিত হয়। আল্লাহতায়ালা এই নির্দেশের সাথে সাথে আরও বলেন-তোমাদের পূর্ববতী উম্মতগণের ওপরও রোজা ফরজ করা হয়েছিলো। তারা তা পালন করতে যত্নবান ছিলো।

আল্লাহতায়ালা বলেন-আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্য পথ ও পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি।

যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন অবশ্যই সকলকে একই উম্মত করে দিতেন। কিন্তু তোমাদেরকে যা কিছু তিনি দিয়েছেন তা দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। অতএব, তোমরা ভালো কাজে প্রতিযোগিতার সাথে অগ্রসর হও।

মিসকিনকে খাদ্যদান করবে।'' এ নির্দেশ আসার পর সাহাবীগণের কেউ কেউ সাওম পালনে সক্ষম হওয়ার পরও তাদের কেউ কেউ সাওম ত্যাগ করে একদিনের পরিবর্তে মিসকিনকে খাওয়াতো। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ''আর সাওম পালন করাই তোমাদের জন্য উত্তম'' এ আয়াতটি নাযিল হয় যা পূর্বের হুকুমকে রহিত করে এবং সবাইকে সাওম পালনেরই নির্দেশ দেয়া হয়। [বুখারী, হাদিস নং : ১২৮১]অর্থাৎ যিনি রোজা রাখবেন তিনি নিজ জ্ঞানে বা স্বেচ্ছায় আল্লাহর হুকুম পালন করবেন।

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে রোজা।মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সুস্থ রেখে, সঠিকভাবে রোজা রাখার তৌফিক দিন এবং আমাদের রোজা এবং আমলসমূহ কবুল করুন।

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এনআই/মে ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর