thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

একক মায়ের জন্য কতটা সহজ পথচলা

২০১৭ মে ১৪ ১৮:২১:৫৭
একক মায়ের জন্য কতটা সহজ পথচলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিশ্বের অনেক দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে পালন করা হয় ‘মা দিবস’ হিসেবে। বাংলাদেশেও, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে গত বেশ কয়েক বছর যাবত ‘মা দিবস’ পালন করা হয়।

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সিঙ্গেল মাদার বা একক মায়েদের সন্তানকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। তারপরও অনেক মা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এককভাবে তাদের সন্তানকে বড় করে তুলছেন। এমনই একজন মা ড্যানি রহমান, ডিজ্যাবিলিটি আছে, এমন শিশু জন্মদানের পর যার সংসার ভেঙ্গে গিয়েছিল।

বাবা তার সন্তানকেও ছেড়ে গেলেও, মা হিসেবে তিনি এককভাবেই ছেলেকে বড় করে তুলেছেন। বর্তমানে গড়ে তুলেছেন স্নায়বিক প্রতিবন্ধকতা আছে এমন শিশুদের জন্য কারিগরী শিক্ষার প্রতিষ্ঠান।

ড্যানি রহমান বলছিলেন, ‘একক মা একটি পরিচয় হতে পারে এই জায়গাটাতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সামাজিকভাবে আসতে পারেনি। সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টা একদমই কম। সম্প্রতি হয়তো এই কথাটা সামনে আসছে।’

‘কিন্তু এখনো শুধু সামাজিকভাবেই নয় পরিবারের ভেতরেও এই গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়নি যে আপনি সিঙ্গেল মা হিসেবে থাকবেন।’

তাছাড়া অর্থনৈতিক বিষয়টাও একটা বড় বিষয় বলে মনে করেন ড্যানি রহমান।

‘অনেক নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বালম্বী না বা শক্তিশালী অবস্থানে থাকে না। আর সাইকোলজিক্যালি নারী হিসেবে এতটা শক্তিশালী এখনো সবাই হয়নি যে নিজের আইডেনটিটি নিশ্চিত করবে।’

ড্যানি রহমান বলছিলেন একা মা হিসেবে সামনে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জায়গাটাও এখনো সামাজিকভাবে বা পারিবারিকভাবে তৈরি হয়নি।

‘এখনো ধরে নেওয়া হয় একজন নারী তার একটা সাইনবোর্ড থাকবে যে সে তারা বাবা বা ভাইয়ের অধীনে থাকবে বা তার স্বামীর সাথে থাকবে।’

ড্যানি রহমানের ছেলের বয়স যখন ছয়-সাত বছর তখন তার সংসার ভেঙে যায়। প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ড্যানি রহমানকে অনেক চাপের মুখে পড়তে হয়েছে।

একজন নারী হিসেবে ড্যানি রহমানের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুস্থ-সবল সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। সন্তান প্রতিবন্ধী হবার কারণে তাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে অনেক চাপের মধ্যে পড়তে হয়েছে।

প্রচণ্ড শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট এবং যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে দিন পার করেছেন ড্যানী রহমান। লোকের মন্দ কথাও তাকে শুনতে হয়েছে।

এমনকি অন্য লোকের কাছ থেক ড্যানি রহমানকে শুনতে হয়েছে, ‘তোমার কোন পাপের জন্য বাচ্চাটা এ রকম হয়েছে।’

ড্যানি রহমান বলছিলেন তখন তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে সন্তানের দিকটা তিনি বেছে নেবেন না ছেলের দিকে নজর দিবেন।

‘তখন সামাজিকভাবে তৈরি ছিলাম না। আশেপাশের ফিডব্যাক কেমন আসবে , গ্রহণযোগ্যতার জায়গাটা কেমন হবে। কী বাধা আসবে ওই রাস্তায় না গেলে আমি জানতামনা ওই পরিস্থিতিটা কেমন হবে’- বলছিলেন তিনি।

পারিবারিক এবং সামাজিক চাপ সামলে প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে কোনো মায়ের একা এগিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব বেশি নেই।

অল্প কিছু উদাহরণের মধ্যে ড্যানি রহমান অন্যতম একজন। তিনি বেশ বাধা-বিপত্তি পার করেই নিজের সন্তানকে লালন-পালন করেছেন।

শেষ পর্যন্ত ড্যানি রহমানের ছেলে এ লেভেল পাশ করেছেন এবং এখন কারিগরি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

তার মতে, ‘প্রত্যেকের জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিজস্ব পছন্দ বা লক্ষ্য থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই মেয়ে হিসেবে নিজেদের সম্মান দেওয়ার বিষয়টা, বাচ্চা, পরিবার, সমাজ সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে তৈরি করতে পারেনি বা তৈরি হয়নি’।সূত্র : বিবিসি।

(দ্য রিপোর্ট/এফএস/মে ১৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর