thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

ইসলামে যাকাত

২০১৭ মে ১৮ ১৪:৫৫:১৯
ইসলামে যাকাত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে যাকাত অন্যতম। যাকাত অর্থ পরিচ্ছন্নতা, পবিত্রতা ও বৃদ্ধি। মুসলমানদের নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ বছর পূর্তিতে আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত খাতসমূহে ব্যয় করাকে যাকাত বলা হয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তাদের (ধনীদের) সম্পদে অবশ্যই দরিদ্র ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে’ (আল-যারিয়াত-১৯)।
যাকাত ইসলামে ধনী-গরিবের মধ্যে সেতুবন্ধস্বরূপ।নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক সকল মুসলিম নর-নারীর উপর যাকাত প্রদান করা ফরজ। কোনো ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর চাঁদের হিসাবে পরিপূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হলে তার উপর পূর্ববর্তী বছরের যাকাত প্রদান করা ফরজ।

নিসাব মানে নির্ধারিত পরিমাণ বা মাত্রা। যে পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত ফরজ হয় তাকে নিসাব বলে। অর্থাৎ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ব্যয় বাদে নিসাব পরিমাণ মালের অধিকারী হলে বছর পূর্তিতে একটি নির্দিষ্ট অংশ আল্লাহর নির্ধারিত খাতে যাকাত দিতে হয়।

যেসকল সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হয় সেগুলো হলো-
*. স্বর্ণ, রৌপ্য (নগদ অর্থ ও গহনাপত্রসহ)
*. গবাদিপশু
*. জমিতে উৎপন্ন ফসল
*. ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্য
*. অর্জিত সম্পদ ইত্যাদি

আমরা জানি, স্বর্ণ সাড়ে সাত ভরি বা সাড়ে সাত তোলা (৮৭.২৫ গ্রাম) বা রুপা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৬১২.২৫ গ্রাম) অথবা এর তৈরি গহনা থাকলে যাকাত দিতে হয়। এর কোন একটি অথবা উভয়টির মূল্য পরিমাণ অন্য কোন সম্পদ থাকলেও তার মূল্যের আড়াই শতাংশ হারে যাকাত দিতে হবে।

যাকাত দেয়ারও কিছু নিয়ম আছে। সবাইকে যাকাত দেয়া যাবে না।
যারা যাকাত পাবেন তারা হলেন-
১. ফকির বা অভাবগ্রস্ত
২. মিসকিন বা সম্পদহীন
৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারী
৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এমন ব্যক্তি
৫. মুক্তিপ্রাপ্ত দাস
৬. ঋণগ্রস্ত
৭. আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও
৮. অসহায় পথিক, অর্থের অভাবে যে সঙ্কটে নিপতিত ।

যাকাত কিন্তু গরিবের জন্য কোন ধরনের দয়া প্রদর্শন নয়। বরং কোন ব্যক্তির সম্পত্তি যাকাত প্রদানযোগ্য হলে তা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তার ধন-সম্পত্তি পাক-পবিত্র হয় না।
যাকাতপ্রাপ্তিতে ধনীদের প্রতি গরিবদের হক রয়েছে। বরং ধনী ব্যক্তি গরিবের হক মেরে খাচ্ছেন হিসেবে বিবেচনা করলেও ভুল হবে না। কারণ ইসলাম ধর্মমতে, সবার মধ্যে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য যাকাতকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে রাখা হয়েছে। মানুষের অর্জিত সম্পদের সুষম বণ্টনের জন্য রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, ধনতান্ত্রিক কতশত সমাজব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। সবকিছুই হলো মানুষের কল্যাণ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য।
কিন্তু ইসলাম ধর্মে যাকাতের বিধান হলো সমাজের আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য একটি উৎকৃষ্টতম পন্থা। যাকাত হলো গোপনে পালনের একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। ধনীরা গোপনে যার যার নিজ নিজ এলাকায় প্রতিবেশীদের ভেতর যারা যাকাত প্রাপ্য, সে সকল ব্যক্তিকে গোপনে তাদের বাড়িতে গিয়ে যাকাত বিতরণের ব্যবস্থা নিতে পারে এ ভাবে প্রতিবেশীর হক যেমন আদায় করা হলো তেমনি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করাও যায়।



রমজান মাসে মুসলিমরা সকলে যদি ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে সঠিকভাবে যাকাত পরিশোধ করত, তাহলে যাকাতের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হতো। এছাড়া যাকাত আদায়ে আল্লাহর বিধান পালন করার মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালে তার নৈকট্য লাভ করা যায়।


(রিপোর্ট/একেএ/এনআই/মে ১৮, ২০১৭)



পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর