thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

অসম্পূর্ণ রেখে বিদ্যুৎ প্রকল্প শেষ, ভোগান্তিতে হবিগঞ্জবাসী

২০১৭ মে ২১ ২২:২৯:৩১
অসম্পূর্ণ রেখে বিদ্যুৎ প্রকল্প শেষ, ভোগান্তিতে হবিগঞ্জবাসী

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তার সুফল পাননি কেউই। কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে হবিগঞ্জবাসী। যদিও সংকট সমাধানে শিগগিরি নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে, স্থায়ী সমাধানের জন্য হবিগঞ্জে গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের ২২ হাজার গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় সেন্ট্রাল জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন প্রজেক্ট। জাইকার অর্থায়নে এ প্রকল্পের আওতায় শাহজিবাজার গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে হবিগঞ্জ বিতরণ উপকেন্দ্র পর্যন্ত নতুন ৩৩ কেভি লাইন, বিতরণ উপকেন্দ্রের ধারণ ক্ষমতা ১৫ মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ৪০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা, ৪টি ফিডারকে ৮টি ফিডারে ভাগ করা, নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপন, জরাজীর্ণ তার ও হেলেপড়া খুটি পরিবর্তনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ আরও ১ বছর বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত করা হয়। এরপরও সব কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে অসমাপ্ত অবস্থায়ই শেষ হয় আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পরিচালিত এ প্রকল্প।

প্রকল্পটি শেষ না হওয়ায় পূর্বের অবস্থাতেই থেকে গেছে হবিগঞ্জবাসীর বিদ্যুতের ভোগান্তি। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। সেই সাথে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক খুটিগুলো হেলে পড়েছে। ফলে, ঝড়-বৃষ্টির সময় খুঁটিগুলো ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে যেকোন ধরণের দূর্ঘটনা।

শুধু বৈদ্যুতিক খুটিই নয়। জরাজির্ণ তারগুলোও নিয়মিত ছিড়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। আর এতে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা।

যদিও এ অবস্থা থেকে শিগগিরি উত্তরণের আশ্বাস দিয়েছেন হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল রহিম বলেন, ‘রাস্তার পাশে নিয়মিত তারগুলো ছিড়ে পড়ে থাকে। তাছাড়া বিদ্যুতের খুটিগুলোও পরিবর্তন করা জরুরি। অন্যথায় যেকোন সময় বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

রমজান মিয়া নামে স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে লাইন মেরামতের জন্য আবেদন করে যাচ্ছি। কিন্তু তারা লাইনগুলো মেরামত করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুনেছি হবিগঞ্জের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সরকার থেকে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু কোথায় গেল সেই ২৫ কোটি টাকা? সেটাই বুঝতে পারছি না।’

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, ‘হবিগঞ্জের বিদ্যুতের চাহিদা এবং সরবরাহের কারণে কোনো লোডশেডিং হয়না। তবে, শাহজিবাজার থেকে হবিগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। ঝড় বৃষ্টির দিনে অনেক সময় ডালপালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে যায়। ফলে হবিগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরায় বন্ধ থাকে। তবে এর স্থায়ী সমাধানের জন্য হবিগঞ্জ শহরের কাছাকাছি একটি গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপন করা জরুরী।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির বলেন, ‘সিলেট জোন বিদ্যুৎ বিতরণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কিছুদিনের মধ্যেই হবিগঞ্জের জরাজীর্ণ তার-খুটি পরিবর্তনসহ নানা উন্নয়ন কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য হবিগঞ্জে গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরী।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বিষয়টি সমাধানের জন্য আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আশা করছি, খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/এজে/মে ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর