৪৬ বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে ৫০৯ গুণ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ১৯৭২-৭৩ সালের জন্য ওই বাজেট ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার (১ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৬তম বাজেট। ঘোষিত বাজেটের আকার হচ্ছে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা।

এ হিসাবে ৪৬ বছরে দেশে বাজেটের আকার বেড়েছে ৫০৯ গুণেরও বেশি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। এ সংখ্যা বর্তমানে সাড়ে ১৬ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪৬ বছরে জনসংখ্যার পরিমাণ দ্বিগুণের চেয়ে সামান্য কিছুটা বেড়েছে। তবে বাজেটের আকার সেই তুলনায় বেড়েছে অনেকগুণ।

সরকারের ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি, শিল্পউৎপাদন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার বৃদ্ধিসহ নানা কারণেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাজেটের আকার। বাজেটের আকার যতই বাড়ছে ততই মানুষের উপর করের হারও বাড়ছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপায়ে নানাভাবে সরকার করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন কতটা ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। দেশে ধনীর সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু তার চেয়ে বাড়ছে ধনী ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বৈষম্য। এ বৈষম্য রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। বরং দিন দিন বাড়ছে বৈষম্যের পরিমাণ।

সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিরোধ করতে না পারার কারণে জনগণ বাজেটের প্রকৃত সুফল পাচ্ছেন না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে স্বাধীনতা অর্জনের ৪৬তম বছর পূর্ণ করলেও এখনো বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাধন করতে পারেনি।

অবশ্য বেসরকারি উদ্যোগ, দেশের জনগণের কর্মস্পৃহার মাধ্যমে ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছর পর্যন্ত বছরে বাজেটের আকার কত ছিল তা নিম্নে দেওয়া হলো :

২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ২০১০-১১ অর্থবছরে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা , ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ৬৯ অর্থবছরে ৭৪০ কোটি টাকা, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৬১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ৫৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ৫১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, ২০০২-০৩ অর্থবছরে ৪৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা, ২০০১-০২ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা, ২০০০-০১ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে ৩৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে ২৯ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা, ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা,১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ২৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা,১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে ২০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা, ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ১৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা, ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ১৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা, ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে ১২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা, ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে ১২ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা, ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা, ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা, ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে ৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা, ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে ৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা, ১৮৪-৮৫ অর্থবছরে ৬ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা, ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে ৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা, ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, ১৯৮০-৮১ অর্থবছরে ৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা, ১৯৭৯-’৮০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা, ১৯৭৭-’৭৮ অর্থবছরে ২ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে ১ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে ১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে ৯৯৫ কোটি টাকা ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৭৮৬ কোটি টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এমকে/জেডটি/এনআই/জুন ০১, ২০১৭)