thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল 24, ৫ বৈশাখ ১৪৩১,  ৯ শাওয়াল 1445

রাজধানীতে অন্তর্বর্তীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্প

২০১৭ জুন ০৩ ২১:৪৪:৫৬
রাজধানীতে অন্তর্বর্তীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্প

ঢাকার অন্তর্বর্তীকালীন পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ১৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে মূল ব্যয় ২৫২ কোটি থেকে ৩৬০ কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হচ্ছে ৬১২ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বাড়ানো হচ্ছে মেয়াদও। ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে মেয়াদ করা হচ্ছে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত। এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর লোক সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ এবং পানির চাহিদা প্রতিদিন ২৪০ কোটি লিটার। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে মানুষ বাড়ছে এবং ২০২০ সাল নাগাদ এ শহরের জনসংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছাবে। জনগণের জীবনযাত্রার মান বেড়ে যাওয়ায় পানির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর প্রতিদিন পানির চাহিদা হবে ৩০০ কোটি লিটার।

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ করে থাকে। প্রতিদিন ২৪০ কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হয়, যার ৮০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ পানি। ৬৭০টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ এ পানি উত্তোলন করা হয়। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে নেওয়া হয় এবং ৫টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে এ পানি শোধন করা হয়।

ঢাকা ওয়াসায় গভীর নলকূপের পানির উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য ইতোমধ্যে ৩টি বড় ধরণের পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এসব শোধনাগার থেকে প্রতিদিন ১৪০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এ সমস্ত পানি শোধনাগার থেকে ঢাকাবাসীকে পানি সরবরাহ করতে কমপক্ষে পাঁচ বছর সময়ের প্রয়োজন। পানি শোধনাগারগুলো নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অন্তরবর্তীকালীন সময়ের জন্য ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার জন্য এই প্রকল্পটি মোট ২৫২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০১৫ সালের মার্চ হতে ২০১৮ সালের জুন মাসে বাস্তবায়নের জন্য একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। পানির চাহিদা বৃদ্ধি, কোনো কোনো স্থানে নলকূপ অকেজো হয়ে যাওয়ার কারণে অধিক সংখ্যক গভীর নলকূপ প্রয়োজন হওয়ায়, নলকূপ ক্রয় ও আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে-১০০টি গভীর নলকূপ ক্রয় ও স্থাপন, ২৫৫টি গভীর নলকূপ ক্রয় ও প্রতিস্থাপন, ১০টি গভীর নলকূপ ক্রয় ও নতুন স্থানে প্রতিস্থাপন, ৬৫ কিলোমিটার পানির লাইন স্থাপন, ৪০ হাজার ঘনমিটার জমি উন্নয়ন, ২৫ হাজার বর্গমিটার ল্যান্ড প্রটেকশন, ১২০টি গভীর নলকূপ পুনর্জীবিতকরণ, ২টি যানবাহন ক্রয়, ১টি বোরহোল ক্যামেরা, ৬টি ডেক্সটপ কম্পিউটার ক্রয়, ৩টি ল্যাপটপ ক্রয় এবং ৩টি ফটোকপিয়ার ক্রয় ইত্যাদি।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকা ওয়াসার আওতায় ৩টি প্রকল্প অর্থ্যাৎ পদ্মা পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট এবং সায়েদাবাদ পানি শোধানাগার (ফেজ-৩) শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ৩টি বড় ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণের কাজ চলমান আছে। তবে এসব প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ পেতে আরো কয়েক বছর সময় প্রয়োজন। বাস্তবায়িতব্য পানি শোধনাগারগুলো নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সময়ে পানি সরবরাহের কভারেজ ধরে রাখার জন্য চলমান এ প্রকল্পটির অনুমোদিত কার্য পরিধি বাড়িয়ে সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে নিরবচ্ছিন্নভাবে ঢাকা মহানগরীতে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।’

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/জেডটি/জুন ৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর