thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

মনু নদীর ভাঙনে পানিবন্দি হাজারও মানুষ

২০১৭ জুন ০৬ ১৯:৫৮:৪২
মনু নদীর ভাঙনে পানিবন্দি হাজারও মানুষ

সেলিম আহমেদ, মৌলভীবাজার : মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙনের ফলে জেলার কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলা বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত বাঁধের ৯টি অংশে ভাঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামে হাজার-হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে, বন্যার পানি বাড়ি-ঘর থেকে না নামায় মানুষ প্রতিরক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে, এখন পর্যন্ত অধিকাংশ বন্যা কবলিত মানুষ নিজ বাড়িতে পানিবন্দি অবস্থায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

দুর্গতদের মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সামান্য চিড়া-গুড় বিতরণ করা হলেও এখনও সেভাবে কোন সরকারী সহযোগিতা পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। এ অবস্থায় সরকারী সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

কুলাউড়া উপজেলা বাঁধরক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক থেকে প্রাপ্ত নগদ অর্থ ও চাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (মঙ্গলবার, ০৬ জুন) উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। তবে, প্রাপ্ত ওই ত্রাণ কুলাউড়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত শরীফপুর, হাজীপুর ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালিক, শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জোনাব আলী জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কিছু শুকনা খাবার, যেমন চিড়া ও গুড় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কোন সরকারি ত্রাণ এখন পর্যন্ত এসব ইউনিয়নে পৌঁছায়নি।

হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানিয়েছেন, ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে শরীফপুর ইউনিয়নে। ভাঙন দিয়ে লোকলয়ে আসা পানিতে হাজীপুর ইউনিয়নের ১৫ থেকে ২০টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সবাই শরীফপুর নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু হাজীপুরের বানভাসী মানুষের কথা কেউ ভাবছে না। বিষয়টি তিনি কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।

রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমুল হক সেলিম ও টেংরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রিপন মিয়া জানিয়েছেন, নিজস্ব অর্থায়নে দুর্গত মানুষকে যতটা সম্ভব সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সরকারি কোন ত্রাণ এখন পর্যন্ত তারা পাননি বলে জানিয়েছেন।

বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ.স.ম কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি সরেজমিন নিশ্চিন্তপুর ও মিয়ারপাড়া ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জন্য অল্প পরিমাণ ত্রাণ বিতরণও করা হয়েছে।’

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি জানিয়েছেন, কুলাউড়া উপজেলায় দুর্গত মানুষের জন্য মাত্র ৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। যা এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণকে তাদের অবস্থান থেকে দুর্গত মানুষকে সহায়তার জন্য বলা হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিলাগাঁও ইউনিয়নে ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার, যেমন- চিড়া, গুড় ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, ‘তাৎক্ষণিক আমার হাতে যা ছিলো, অর্থাৎ ৪০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা সবটাই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি। এই বরাদ্দ পাবে মনু ও ধলাই নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা।’

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এপি/জুন ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর