thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ 24, ১৪ চৈত্র ১৪৩০,  ১৮ রমজান 1445

পাহাড় ধসে ৪ সেনাসহ নিহত ৩৯ : ত্রাণমন্ত্রী

২০১৭ জুন ১৩ ১৭:২৮:৪৪
পাহাড় ধসে ৪ সেনাসহ নিহত ৩৯ : ত্রাণমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসে চার সেনা সদস্যসহ মোট ৩৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার (১৩ জুন) পাহাড় ধসের পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। আরও দুইজন সেনা সদস্য নিখোঁজ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর চার সদস্য শাহাদাত বরণ করেছেন। দুই জন সেনাসদস্য নিখোঁজ রয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যতটুকু খবর পেয়েছি সে অনুযায়ী ৩৯ জন মারা গেছেন। আরও অনেকে হয়তো পাহাড়ের মাটিচাপায় রয়েছেন।’

মায়া বলেন, ‘পাহাড়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সেনাবাহিনীর যে চার সদস্য শহীদ হয়েছেন তারা হলেন- মেজর মাহফুজ, ক্যাপ্টেন তানভীর, কর্পোরাল আজিজ ও সৈনিক শাহীন। বাংলাদেশে এটা প্রথম নজির যে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে ৪ জন বীর সৈনিক শহীদ হয়েছেন।’

উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় বীর সৈনিক বন্ধুরা উদ্ধার কাজে এখন পর্যন্ত তৎপর রয়েছেন। এছাড়া ফায়ার ব্রিগেড, স্বেচ্ছাসেবক, দলীয় কর্মীরা উদ্ধার কাজে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর ৬ জন ছাড়া সেখানে বসবাসকারী আরও ৩৩ জন পাহাড় ধসে মারা গেছেন। সেখানে এখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও মৃদু বাতাস হচ্ছে।’

পাহাড়ি এলাকায় ইতোমধ্যে ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খেলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চার থেকে সাড়ে চার হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে রেখেছি। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ঘরে ফিরে যাবে ততদিন তা অব্যাহত থাকবে।’

‘তাৎক্ষণিকভাবে তাদের (পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত) সাহায্যের জন্য ইতোমধ্যে আমরা ৫০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করেছি। ১২ লাখ টাকা ইতোমধ্যে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করার জন্য দেওয়া হয়েছে।’

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে, আহতদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০ কেজি করে চাল ও শুকনা খাবার দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। আমাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই। সাহায্য করতে কোন কৃপণতা নেই। যখন যেটা যেখানে প্রয়োজন হবে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সেটা করতে সক্ষম হব।’

‘নিহতের পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো আমাদের কোন ভাষা নেই। আল্লাহ যেন তাদের শোক সহ্য করার শক্তি দেন।’

মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘বীর বাহাদুরসহ যে সব স্থানীয় এমপি সংসদে ছিলেন তারা এলাকায় চলে গেছেন উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করার জন্য। সরেজমিনে দেখতে আগামীকাল (বুধবার) সকাল বেলা আমরা রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে রওনা হব। গিয়ে দেখব কীভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনকে উদ্ধার করতে পারি, সহযোগিতা করতে পারি। আমরা সেটা করব।’

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। সে অনুযায়ী কাজ চলছে, একটি মানুষও যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়’ বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী।

বৃষ্টি শুরুর সময় থেকে কি প্রস্তুতি ছিল- জানতে চাইলে মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘যখন ৩ নম্বর সিগনাল থাকে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে বলে দেওয়া হয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। স্বেচ্ছাসেবক ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়। এছাড়া ফায়ার-সার্ভিস ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করে রাখার জন্যও বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ইচ্ছা করলেও মানুষকে সরিয়ে নেওয়া যায় না। পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করা হয়। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। অনেক সময় জোর করে পুলিশ দিয়ে আনতে হয়। সেখানে দু’দিন ধরে মাইকিং হচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি শতভাগ থাকে। তারপরও অনেকে (আশ্রয় কেন্দ্রে) আসতে চায় না।’

তবে আগে মানুষকে আহ্বান জানানো হলেও দুর্যোগের সময় আশ্রয় কেন্দ্রে আসত না, এখন স্বেচ্ছায় আসে বলেও জানান মন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল, ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) শাকিল নেওয়াজ উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/জুন ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর