thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

‘আবগারি শুল্ক’র নাম পরিবর্তন ও হার কমবে : অর্থমন্ত্রী

২০১৭ জুন ১৮ ১৫:২০:৫৫
‘আবগারি শুল্ক’র নাম পরিবর্তন ও হার কমবে : অর্থমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ব্যাংক হিসাবের উপর সরকারের আদায় করা ‘আবগারি শুল্ক’ নামটি পরিবর্তন করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘোষিত আবগারি শুল্কের হার কমবে বলেও জানান তিনি।

সচিবালয়ে রবিবার (১৮ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ২০১৮ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সচিব সাহেব একটু আগে বলেছেন আমাদের আর্থিক খাত নিয়ে অনেক সমালোচনা বাজারে প্রচলিত। বিশেষ করে বাজেট দেওয়ার পর সেই সমালোচনা আরও একটা উচ্চ মার্গে পৌঁছে গেছে। অনেক সময় হয় কি...আমার ধারণা যখন আর কোন কিছু খুঁজে না পাওয়া যায়, তখন কোন একটা কিছু বের করতে হয়। এবারে এটা খুব বেশিভাবে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে একটা সো কলড আবগারি শুল্ক যেটা আদায় করা হয়। নামটা ঠিক নয়, নামটা আমরা পরিবর্তন করব। আবগারি শুল্কটা নামটা কোন মতেই হওয়া উচিত নয়। এটা ইজ পার্ট অব দ্য ইনকাম ট্যাক্স। যাই হোক কীভাবে বর্ণনা করা যায় সেটা চিন্তা করা যাবে।’

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বহু বছর ধরে ব্যাংকগুলো (আবগারি শুল্ক) দিয়ে যাচ্ছে, যাদের অ্যাকাউন্ট আছে তারা প্রত্যেকে দিয়ে যাচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। রেইটস একটু বাড়ছে এ বছরে। কিন্তু সুযোগও বেড়েছে।’

‘২০ হাজার টাকা থাকলেই আগে (আবগারি শুল্ক) দিতে হত, এখন সেটা আমার এক লাখ টাকা পর্যন্ত উন্নীত করে দিয়েছি। এক লাখ পর্যন্ত জিরো। এটা নিয়ে খুবই আলাপ-আলোচনা হয়েছে বাজারে। আমি ইতোমধ্যে বলেছি, বাজেটে যেটা হয় সেটা তো প্রস্তাব। যখন পাস হয় তখন সেইসব প্রস্তাবের অনেকগুলো পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে এই ধরনের বিষয়। যেখানে রেইট ৮০০ টাকা হল না ৫০০ টাকা হল, এ ধরনের ব্যাপারে পরিবর্তন হয়’ বলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মুহিত।

তিনি বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে বলেছি, এত চিৎকার যখন বাজারে আছে সুতরাং এগুলো একটু পরিবর্তন সেখানে হবে। কথাটা বললাম এজন্য এ কথাটি পার্লামেন্টে বলতে আমার অনেক দেরি হবে। পার্লামেন্টে বলতে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলে যাবে। তার আগেই যাতে অনেকে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে সেজন্য কথাটা বললাম।’

গত ১ জুন ঘোষিত আগামী অর্থবছরের (২০১৭-১৮) প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ব্যাংক গ্রাহকদের ওপর বাড়তি হারে আবগারি শুল্ক আরোপের পর থেকেই এ নিয়ে ব্যাপক সামালোচনা সৃষ্টি হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি জমা হলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০০ টাকা হবে।

পাশাপাশি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে মানি লন্ডারিং নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। সেই বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘এটা (মানি লন্ডারিং নিয়ে বৈঠক) নিয়মিতভাবেই হয়। আগে একটু বেশি হত, এখন অনেক কমে গেছে। বেশি হওয়ার কারণ ছিল আমরা তখন আমাদের অবস্থা একটু খারাপ ছিল। তার প্রধান কারণ ছিল আমাদের আইনকানুন তেমন শক্ত ছিল না। ছিলও না অনেক ক্ষেত্রে। এগুলো করতে আগে ঘন ঘন বসতে হতো। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে দক্ষতা যাতে আরও উন্নত হয় সেজন্য এখন মাঝে মাঝে সভায় বসতে হয়।

টাকা পাচার প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছিলেন- কী পদক্ষেপ নেবেন- এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা পাচার হয় কী কারণে? আমার কাছে কালো টাকা আছে বলে। কালো টাকা না থাকলে কেউ তো পাচার করত না। আমাদের কিছু কিছু আইনকানুন আছে যাতে কালো টাকা জমাবার একটা সুযোগ থাকে। আমরা সেখানে থেকেই প্রথম অভিযানটা শুরু করব। যাতে কালো টাকা আমার হাতে না পড়ে।’

মুহিত বলেন, ‘উদাহরণ দেই আমাদের হিসেবে এক কাঠা জমি যে দামে বিক্রি হয়, তার সঙ্গে প্রকৃত মূল্যের পার্থক্য থাকে ১০ গুণ। তার মানে ৯ গুণ কালো টাকা হয়ে গেল। এক দশক জমির দাম গুলশানে এত হবে, ধানমণ্ডিতে এত হবে- এটা দেওয়ার ফলে সবগুলো জমি রেকর্ড হচ্ছে ওই দামে। প্রকৃত দাম হচ্ছে এর চেয়ে ৯ গুণ বেশি, যা কালো টাকা। সেখানে যদি আমরা একটা ব্যবস্থা নেই যে রিয়েলিস্টিক একটা প্রাইস ফিক্সড করে দেই।’

জমির দামের ক্ষেত্রে সরকার এখন যেটা করতে চাচ্ছে আগে এটা ছিল, সেখানে সমস্যা হওয়ায় বর্তমান ব্যবস্থা চালু করা হয়। আমরা কি তবে আগের ব্যবস্থায় ফিরে যাচ্ছি- এ বিষয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘নো, নো। আগেটায় ছিল লেস এ ফেয়ার, কিছু নেই। আমরা এখন প্রাইস রাখব। এখন যেটা হবে তা হল- মূল্য হবে বাস্তবভিত্তিক।’

১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বছর শেষে কাজের মূল্যায়ন করব তখন দেখতে পাব টার্গেটগুলো মোরলেস অ্যাচিভড হয়।’

গত ২ বছর ধরে এ ধরনের চুক্তি হচ্ছে। গত বছরের কতটুকু লক্ষ্য অর্জন হল- এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ৩০ জুন শেষ হওয়ার পর পর আমরা একটা ইভ্যালুয়েশন করব। এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে কোন মূল্যায়ন আসেনি। কতটুকু অ্যাসিভ করেছি তা জুলাই নাগাদ বুঝতে পারব।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/জুন ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর