thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সংবিধানের আলোকে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবে বিএনপি

২০১৭ জুলাই ০৬ ২১:১৬:৩৮
সংবিধানের আলোকে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবে বিএনপি

আগামী বছরের ডিসেম্বরেই একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আভাস দেশের রাজনীতিক অঙ্গনে। নির্বাচনে সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে বাদ রেখে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা উপস্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে বিএনপিতে। চলতি বছরের আগস্টে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সরকারের রূপরেখা দেশবাসী ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদদের সামনে তুলে ধরবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির মূল দাবিই থাকবে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন না। তাকে সরে যেতে হবে। অন্যান্য দাবির সাথে এই দাবিই মূলত প্রধান দাবি হিসেবে তুলে ধরতে চায় বিএনপি।

এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা জানিয়েছেন, আমরা শেখ হাসিনাকে ছাড়াই সহায়ক সরকারের দাবির প্রতি জোর দিব। তবে আলোচনার পথ খোলা রাখতে চাই। সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনা থাকলেও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও সহায়ক সরকারের মন্ত্রী সভায় সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপক রদবদলের দাবি জানাবে বিএনপি। তবে সেটা হবে সবশেষ ধাপ।

জানা গেছে, বিএনপির সহায়ক সরকারের রূপরেখার খসড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি।বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে সহায়ক সরকারের ধারণা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। রূপরেখা নিয়ে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, সহায়ক সরকারে নির্দলীয় কাউকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী করে তার নেতৃত্বে সরকার কিংবা বর্তমান মন্ত্রী সভার কাউকে সরকার প্রধান করা হলেও বিএনপির আপত্তি থাকবে না। এ ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে যেভাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট করে সরকার গঠিত হয়েছিল তেমনটাও উদাহরণ হিসেবে থাকতে পারে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি কিংবা সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সমন্বয়েও সহায়ক সরকার গঠনের ধারণা দেবে বিএনপি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সবার মতামত সমন্বয় করে তা চূড়ান্ত করবেন খালেদা জিয়া।

উল্লেখ্য, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে 'নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে' বলে বলা হয়েছে। সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর স্বাভাবিক মেয়াদকাল হচ্ছে 'প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত'

বিএনপি নেতারা সংবিধানের এই অংশটুকু উল্লেখ করে বলছেন, সংবিধান অনুযায়ীই শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। আর বিএনপি সেই দাবিই সহায়ক সরকারের রূপরেখায় তুলে ধরতে চায়।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে ছাড়া দলের আর কাউকে বিশ্বাস করেন না। সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অন্য কোনো নেতা সরকারপ্রধান হলে আর মন্ত্রীসভায় বিরোধীদলের সদস্যরা থাকলে আওয়ামী লীগের মধ্যেই অন্তঃকোন্দল দেথা দিবে এবং বিএনপিও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে দাবি করছে তা পূরণ হবে।

সহায়ক সরকারের রূপরেখার ধারণা যাদের কাছে চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘আসলে সহায়ক সরকার সংবিধানের মধ্যেই গঠন করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে বাদ রেখেও সম্ভব। এই দিকগুলোই মূলত আমরা দেখছি। তবে সবকিছুই হবে আলোচনার মাধ্যমে। বিএনপি চেয়ারপারসনের দেশের বাইরে যাওয়ার কথা আছে। উনি ফিরলেই আমরা প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করব।’

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেমন হয়, ৫ জানুয়ারি দেশের জনগণ তা দেখেছে। তাই সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি শেখ হাসিনা চান, তাহলে তাকে সরকারপ্রধানের পদ ছাড়তে হবে। বর্তমান সরকার ৭৫ এরমতো বাকশাল করতে চলেছে। এদের অবস্থা কি হবে বুঝতেই পারছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির সহায়ক সরকারের প্রস্তাব আসছে। আশা করি, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের রুদ্ধপথ আবার আলোর মুখ দেখবে।’

বিএনপির স্থায়ীকমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা প্রণয়নের কাজ চলছে। চূড়ান্ত হলে দলের অভ্যন্তরে আলোচনার মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/জেডটি/কমিটিরজুলাই ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর