প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের বাগৃহাল গ্রামের আছকর আলীর মেয়ে রেহানা বেগমের (১৭) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। মেয়ের প্রেমিকের সাথে বিয়ে না দিতে এবং নিজের কিছু প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে হত্যা করে ঘাতক পিতা। শেষতক মেয়েকে হত্যার কথা পুলিশসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে স্বীকার করে ঘাতক পিতা আছকর আলী।

টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কানাইলাল চক্রবর্ত্রী জানান, রেহানা বেগমের সাথে একই ইউনিয়নের আশ্রয় গ্রামের লালা মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। এরই সুবাদে লাল মিয়া বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় রেহানা বেগমের বাড়িতে। কিন্তু বিষয়টি মেনে নেননি রেহানা বেগমের বাবা আছকর আলী। উল্টো মেয়েকে হত্যা করে দায় চাপানোর চেষ্টা করে লাল মিয়া ও তার সহযোগিদের উপর। কিন্তু বিষয়টি পুলিশের কাছে সন্দেহ হলে ঘাতক পিতা আছকর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ০৯ জুলাই রবিবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ ও আছকর আলীকে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে একাধিকবার তদন্ত করে। শেষতক রাতে পুলিশের কাছে হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। এরপর আবারও ঘাতককে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা জামা উদ্ধার করে।

ঘাতক পিতা আছকর আলী পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে জানায়, মেয়ের প্রেমিকসহ কিছু প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আছকর আলী স্ত্রীসহ এক ছেলে ও এক মেয়েকে শ্বশুড়বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ৩টায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মেয়ে রেহানা বেগমকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। রেহানা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত হলে রক্তমাখা জামা ছুরি লুকিয়ে ব্লেড দিয়ে নিজের মাথায় ও বাম পিঠে কেটে, আমারে মারি লাইলারে-বলে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে নাটক সাজায় আছকর আলী।

টিলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক, স্থানীয় ৩ জন ইউপি সদস্য, নয়াবাজার কমিটির ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারিসহ এলাকার বহু লোকের সন্মুখে সমস্ত ঘটনার স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছোড়া ও ব্লেড লুকানো স্থান থেকে বের করে।

কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিনয়ভূষণ রায় জানান, নিহত রেহানা বেগমের মা শাহানা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘাতক পিতা আছকর মিয়াকে সোমবার (১০ জুলাই) আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/জুলাই ১০, ২০১৭)