thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

রাবির শৌচাগারের শোচনীয় অবস্থায়

২০১৭ জুলাই ১৬ ১২:৩৮:৫৮
রাবির শৌচাগারের শোচনীয় অবস্থায়

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শৌচাগারের জরাজীর্ণ অবস্থা, ময়লা-দুগর্ন্ধ, নিয়মিত পরিষ্কার না করা এবং মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত আলাদা শৌচাগার না থাকায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুয়ার্ড শাখা বলছে জনবল সংকটের কারণে শৌচাগার নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শৌচাগারের নোংরা পরিবেশের কারণে আমরা হরহামেশাই সমস্যায় পড়ছি। মেয়েদের জন্য একাডেমিক ভবনগুলোতে পর্যাপ্ত শৌচাগার নেই। যার ফলে প্রাকৃতিক কাজ সারতে আমাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অবস্থা দ্রুত দূর করার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলা ভবন, শহীদুল্লাহ কলা ভবন, মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আটটি অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, চিকিৎসা কেন্দ্রসহ অধিকাংশ ভবনের শৌচাগারের বেহাল দশা। আবার যেগুলো মোটামুটি ব্যবহারের উপযোগী সেগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় শৌচাগারগুলো ভেঙে ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ শৌচাগারের সিটকানি নেই। বেসিন ভাঙা, ব্যবহৃত পানির ট্যাপগুলো নষ্ট। পানির ট্যাপ ভেঙে অনবরত পানি পড়ে শৌচাগারের মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে। তীব্র দুর্গন্ধের কারণে ভেতরে ঢুকে দরজা লাগানোর মতো অবস্থা নেই। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় এসব শৌচাগার এখন সংক্রামক রোগজীবাণুর উৎসে পরিণত হয়েছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সবচেয়ে বেহাল দশা মমতাজ উদ্দীন কলা ভবন এবং শহীদুল্লাহ কলা ভবনের শৌচাগারগুলোর। আকারে ছোট হওয়ায় ভালোভাবে বসা যায় না। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। উৎকট দুর্গন্ধের কারণে ভেতরে প্রবেশ করা কষ্টকর।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ছাত্রীদের। একাডেমিক ভবনগুলোতে ছাত্রীদের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় শৌচাগার অপর্যাপ্ত। অনেক সময় ছাত্রদের ব্যবহৃত শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়। যার ফলে ছেলে-মেয়ে উভয়কে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কানিজ কলি বলেন, মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকা এবং শৌচাগার অপরিষ্কার থাকায় অনেক মেয়ে ওয়াশরুমে যেতে চায় না। অনেকে শৌচাগারে যাওয়ার ভয়ে কম পানি পান করেন। যার দরুন অনেকেই মূত্রথলি, ইউরিন ইনফেকশন ও কিডনির সমস্যায় ভুগছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব উল্লাহ বলেন, শিক্ষাথীদের জন্য শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্ব। অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শৌচাগারই ব্যবহারের অনুপযোগী। যা শিক্ষার পরিবেশকে বিনষ্ট করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, শৌচাগার পরিষ্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত পরিষ্কার করেন না। প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করলে শৌচাগারগুলো ব্যবহার উপযোগী হতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুয়ার্ড শাখায় জনবল সংকট আছে বলে জানান স্টুয়ার্ড শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসাইন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক এফ এম এ এইচ তাকী জানান, শৌচাগারগুলোর সংস্কারের দায়িত্ব প্রকৌশল দপ্তরের। কোনো শৌচাগার সংস্কারের প্রয়োজন হলে আমরা প্রকৌশল দপ্তরকে অবহিত করি। শহীদুল্লাহ কলা ভবনের নিচতলায় দুটি শৌচাগার সংস্কার করা হয়েছে। দুর্গন্ধ না ছড়ানোর জন্য বায়ু নিষ্কাশন ফ্যান এবং স্প্রিং লাগানো দরজা লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি শৌচাগারগুলোও সংস্কার করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর জানান, কোনো অনুষদ বা বিভাগ শৌচাগার সংস্কারের বিষয়ে আমাদের জানালে আমার দ্রুত সময়ের মধ্যে তা সংস্কার করি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে পর্যাপ্ত অর্থ ও জনবল সংকটের কারণে কাজগুলো করতে সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এম/জুলাই ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর