thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

রায়ে সন্তুষ্ট নন চার শিশুর স্বজনরা

২০১৭ জুলাই ২৬ ২০:২১:০৩
রায়ে সন্তুষ্ট নন চার শিশুর স্বজনরা

কাজল সরকার, বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি থেকে ফিরে : জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের বহুল আলোচিত চার শিশু হত্যা মামলার রায়ে ৩ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নিহত চার শিশুর পরিবার ও গ্রামবাসী। এ মামলার প্রধান আসামি খালাস পাওয়ায় চার শিশুর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই পরিবারগুলোর দা্বি এ মামলায় ৩ জনের নয়, আসামি ৮ জনের ফাঁসি চাই।

বুধবার (২৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত চার শিশুর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। নিহতের পরিবারের সদস্যদের আত্মচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। কান্না জড়িত কণ্ঠে সকলের একই দাবি এই মামলার ৮ আসামিরই ফাঁসি চাই।

এ সময় তাদের কান্না দেখে সাংবাদিক, এলাকাবাসী কেউ চোখে পানি ধরে রাখতে পারেনি।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রুবেল মিয়া, আরজু মিয়া ও উস্তার মিয়া। এছাড়াও এ মামলা থেকে পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল, বাবুল মিয়া ও বিল্লাল মিয়া নিরপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

নিহত শুভর মা পারুল বেগম, দাদী মরম চান, মনিরের মা ছুলেমা খাতুন, ইসমাঈলের মা মিনারা খাতুন এ রায় শুনে বাড়ীর উঠানে পড়ে আত্মচিৎকার করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরলেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন। পরে তাদেরকে অজ্ঞান অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। জ্ঞান ফিরলেই বলতে থাকেন-‘এ রায় মানি না। প্রধান আসামি আব্দুল আলী বাগালের জামিন হয়ে গেছে, সে বাড়ীতে ফিরে আমাদের মেরে ফেলবে।’

নিহত ইসমাঈলের মা মিনারা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এ মামলার প্রধান আসামি আব্দুল আলী বাগালের মেয়ে আমাদেরকে প্রায়ই হুমকি দেয়, তার বাবা জেল থেকে বের হলে আমাদেরকে কচুর মত কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবে।’

চার শিশু হত্যা মামলার বাদি নিহত মনির মিয়ার বাবা আবদাল মিয়া তালুকদার বলেন, ‘এ মামলার প্রধান আসামির ফাঁসি হয়নি, তাই আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট হইনি। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেল) রাসেলুর রহমান বলেন, ‘পুরো গ্রাম ঘুরেছি এবং ৪ শিশুর পরিবারের সাথে দেখা করে এসেছি। সকাল থেকেই ঐ এলাকায় পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আগামীতেও তাদের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)। মনির সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে, তার দুই চাচাত ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। আর তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটিকি মাদরাসার ছাত্র।

নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ইছাবিল থেকে তাদের বালিচাপা লাশ উদ্ধার হলে দেশজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বাহুবল থানায় নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মনির মিয়ার বাবা আবদাল মিয়া।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জুলাই ২৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর