thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল 24, ৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ৮ শাওয়াল 1445

তরুণ কবি ফয়সাল হাবিব সানির ৩টি কবিতা

২০১৭ আগস্ট ০৯ ১৩:০৮:২৪
তরুণ কবি ফয়সাল হাবিব সানির ৩টি কবিতা

নীলাবতী সিরিজ-২

কবি একদিন জোছনা কুড়াতে গেলো পৃথিবীর পথে
পৃথিবীর পথে যেতে যেতে নীলাবতীকে পেলো সে, যেন পৃথিবীর সব নীল শুষে নিলো কবির হৃদয়।
কিন্তু ছোঁয়ার আগেই কোথায় যেন হারিয়ে গেলো নীলাবতী নীলকন্যা!
কবির আর জোছনা কুড়ানো হলো না।
পৃথিবীর সব জোছনারা ঝরে পড়লো কবির পায়ে
তারপর খেলো হামাগুড়ি,
আর নীলাবতী সর্বস্ব নিয়ে হামাগুড়ি খেতে থাকলো কবির সত্তায়,
তারপর হলো ক্ষত-
আর অবশেষে সেখান থেকে প্রেম ইনফেকশান!

নীলাবতী সিরিজ-৪

নীলাবতীকে নীল শাড়িতে বেজায় লাগতো
মুক্তার জন্মে যেমন কাদা মাখা অবহেলিত ঝিনুককে মনে হতো ঝলমলে আলোক পিদিম,
যদিও নীলাবতী ছিলো কবির দুর্লভ্য প্রেম
তারপরও যতোবার দেখেছি মনে হয়েছে,
নীলাবতী নীল শাড়ি পড়ে ছোট ছোট পা ফেলে কখন যেন কবির অন্তরগৃহে ঢুকেছে
যেন নীল শাড়ি নয়, নীল জোছনার আস্তরণে মোড়ানো চাঁদের শরীর তার!
ইচ্ছে থাকলেও কলম হাতে ওই দুঃসাধ্য চাঁদ ছোঁয়ার স্পর্ধা কখনোই জাগেনি কবির,
জেগেছে কেবলই পৃথিবীর পথে পথে কেঁদে বেড়ানো আজন্ম কি এক তৃষিত বঞ্চিত প্রেমের ক্ষুধা!
যে ক্ষুধা আদ্যন্ত ক্ষুধিত করেছে কবিকে রাতের গহনে ফুটন্ত জোনাকির মতো,
যে জোনাকিরা রাতের তলদেশে জ্বলে জ্বলে পোকামাকড় খেয়ে তাদের আহার মেটায়।
আর কবি তো চেয়েছিলো নীলাবতীর আলোয় জ্বলে সেও আহার সঞ্চয় করতে যাবে,
কেবল নীলাবতীর প্রেমই হবে তার বেঁচে থাকার খাদ্য।

নীলাবতী সিরিজ-৯

আকাশের বুকে ঝুলে থাকা ধ্রুবতারাটি কতো সহজেই বৃষ্টির মতো ঝরঝর করে ঝরে পড়লো একদিন,
তারপর পৃথিবীর পদভারে ও পদাঘাতে দারুণভাবে দলিত হলো সে,
কি সকরুণ আর্তি গভীর ভেতরে জমা ছিলো তার
সে কথা কবি জানে!
কবি জানে, পৃথিবীর পদভারে দলিত ওই ধ্রুবতারাটি উঠে দাঁড়াতে চেয়েছিলো,
অব্যক্ত বলতে চেয়েছিলো কিছু,
কিছু তো বলতে চেয়েছিলো! তবু মাথা তুলে সদম্ভে উঠে আকাশকে বলতে পারলো না সে ভালোবাসার কথা তার,
যেমনি কবিও বলতে পারেনি নীলাবতীকে!
হয়তো এখন আকাশ ও ধ্রুবতারার দূরত্বই সৃষ্টি করেছে আরেক দূরত্ব,
যে দূরত্বের সীমানা দূরত্বেরও অনেক ঊর্ধ্বে!
কবিও নীলাবতীকে দেখেছিলো সেদিন দূর থেকে,
যতোটুকু মনে হয় হয়তো তার আরও বেশি দূর থেকে...
কোনো এক অস্পষ্ট অবয়বে নীল শাড়ি কোমরে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেন কেউ,
যুগ-যুগান্তর কারও জন্য যেন দীর্ঘ অপেক্ষা তার, প্রতীক্ষা দীর্ঘ তার!
তবে কবি জানে না, এ অপেক্ষা নাকি প্রতীক্ষা নীলাবতীর, প্রতীক্ষা নাকি অপেক্ষা কারোর!
চোখের দূরত্ব হয়তো নীলাবতীকে দূরে রেখেছে কবির থেকে
কিন্তু মনের দূরত্ব সে তো নীলাবতীকে কাছে এনেছে অনেক বেশি,
হয়তো কাছে পাবার থেকেও বেশি!
কেননা কবি জানে, চোখের দূরত্ব থেকে মনের দূরত্ব অধিক,
অধিক মানে আরও অধিক, আরও বেশি অধিক...

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর