thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি হানিফের

২০১৭ আগস্ট ১২ ১৮:৪৮:০৫
জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি হানিফের

রাজশাহী অফিস : আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্যে দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। এজন্য বাংলাদেশ এখনও বারবার হোঁচট খাচ্ছে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করলেই বিভক্ত জাতিকে এক করা সম্ভব।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. কায়ছার রহমান অডিটোরিয়ামে শনিবার দুপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদবিরোধী প্রশিক্ষণ, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন করেন।

তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি। রায়ও কার্যকর করেছি। অনেকে বিদেশে পালিয়ে আছে, তাদেরও ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা বিচারের মধ্য দিয়েই এই হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এই জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন করে জাতিকে বিভক্ত করে দিয়েছে। যে বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, এই বিভাজন মিটিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা দরকার।

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দেশের জনগণ আজ উদ্বিগ্ন। এই ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে দেশের মধ্যে একটা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আমি আদালতের রায় নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। কিন্তু আদালতের বিচার্য বিষয়ের বাইরে পর্যবেক্ষণের কথা বলে জাতির মধ্যে যে বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়েছে সেই কথাটা আমি বলতে চাই। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বিএনপি নেতাদের চিন্তা-চেতনা ও দেশ নিয়ে ষড়ষন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা।

প্রধান বিচারপতিকে ইঙ্গিত করে হানিফ বলেন, রায়ের পাশে পর্যবেক্ষণে অনেক কথা বলেছেন। সংসদ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। সংসদ নিয়ে বলেছেন, যে সংসদ সদস্যরা অপরিপক্ক। তারা নিজেরাই (এমপিরা) যোগ্য কি না এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আজকে যে এই রায় দিচ্ছেন, আপনারা কার দ্বারা নিয়োজিত? কার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত? এই সংসদের মাধ্যমে গঠিত সরকার, সেই সরকারের রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। যদি সংসদ সদস্যরা অযোগ্য ব্যক্তি হন, তাহলে আপনারা অযোগ্য ব্যক্তির দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এখানে কথা বলছেন।

তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর একটা অনুচ্ছেদে ছিল- কোনো বিচারপতি যদি শারীরিকভাবে অসমর্থতা বা তার বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিক অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সংসদে এলে সেখানে আলোচনার মাধ্যমে ওই বিচারপতিকে অপসারণের ক্ষমতা সংসদে রাখতে পারে। এই সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতাকে হরণ করা হলো।

আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। এখানে জাতির পিতার বাইরে অন্য কারও কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। এই একক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যারা কথা বলতে চান, তারা মূলত স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করার চক্রান্তে লিপ্ত। আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, সাংবিধানিক পদে থেকে আপনি ইতিহাস বিকৃতি করবেন, এটা বাংলাদেশের জনগণ কখনো মেনে নিবে না।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।

জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে এতে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালসহ সংস্থাটির বিভাগীয় কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত রাজশাহী বিভাগের আলেম-ওলামাগণ অংশ নেন। আলোচনা সভা শেষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/আগস্ট ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর