thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১১ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

জামালপুরে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দী

২০১৭ আগস্ট ১৬ ১৭:১৩:৫৪
জামালপুরে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দী

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে জেলার সাত উপজেলার ৬৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৬ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

রেললাইনের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে জামালপুর-সরিষাবাড়ী তারাকান্দি রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তারাকান্দি বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগ সড়ক এখন হুমকির মুখে। সেনা সদস্যরা এ সড়ক রক্ষায় কাজ করছেন।

গত সোমবার রাত ৯টা থেকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথের দুরমুঠ রেলস্টেশন থেকে শুরু করে ইসলামপুর উপজেলার বুরুঙ্গী বিল এলাকা পর্যন্ত বন্যার পানিতে রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় ওই পথে ট্রেন চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। ইসলামপুর রেলস্টেশন মাস্টার আমিনুল ইসলাম জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জামালপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জ ও জামালপুর-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি পর্যন্ত সকল প্রকার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

এদিকে বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী নবকুমার চৌধুরী এবং পানি মাপক গেজ পাঠক আব্দুল মান্নান।

সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ইসলামপুর উপজেলা। এ উপজেলার সদরের সাথে ৮টি ইউনিয়নে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইসলামপুর উপজেলার পার্থর্শী কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, ইসলামপুর সদর, পলবান্দা, ইসলামপুর পৌরসভা, গোয়ালেরচর, গাইবান্দা, চরগোয়ালীনী ও চরপুটিমারী ইউনিয়নবাসী বন্যার আক্রান্ত।

মেলান্দহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। মেলান্দহ থেকে মাহমুদপুর-হাজরাবাড়ি-মাদারগঞ্জ মহিষবাথান সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই মেলান্দহ পৌরসভায় পানি প্রবেশ করেছে। প্রায় লক্ষাধিক মানুষ হাজার মানুষ পানিবন্দী। বিশুদ্ধ পানিসহ গবাদিপশুর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মেলান্দহে দুইশতাধিক পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা, আওনা, পোগলদিঘা, সাতপোয়া ও কামরাবাদ ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুনাবাদ, চরআমখাওয়া ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করেছে। বকশিগঞ্জ উপজেলার সাদুরপাড়া, মেরুরচর, বগারচর, ইউনিয়ন এবং জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর, তুলশিরচর, রানাগাছা, শরিফপুর, নরুন্দি, ইটাইল ইউনিয়নের চর এলাকার গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

মানুষসহ গৃহপালিত পশু মহিষ, গরু, ছাগল হাঁস, মরগি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষ গুলো উচু বাঁধে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি ফসল, রোপা আমন ধান, বীজতলা, আখ, পাট, কাঁচা শাক-সবজি, তরিতরকারী, বন্যার পানিতে তলিয়ে নষ্ট হচ্ছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি গো-খাদ্যে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সারাজেলায় ৮১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৩০টি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা ও কলেজসহ সর্বমোট ৮৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাসেল সাবরিন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ২১৮ মেট্রিকটন চাল, নগদ দুই লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এপি/আগস্ট ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর