thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় বেনাপোল বন্দরে চাল খালাশ বন্ধ

২০১৭ আগস্ট ১৭ ২১:৫৭:৫১
শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় বেনাপোল বন্দরে চাল খালাশ বন্ধ

বেনাপোল প্রতিনিধি : চাল আমদানিতে বিদ্যমান ১০ ভাগ শুল্ক প্রত্যাহারের প্রত্যাশায় বেনাপোল বন্দরে চাল খালাশ বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা। এ অবস্থায় গত পাঁচ দিন ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরের ভেতর আটকে আছে প্রায় ৩০০ চাল বোঝাই ট্রাক। ফলে পণ্য লোড-আনলোডসহ ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম। বন্দর কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এভাবে চাল খালাস বন্ধ থাকলে বন্দরে বড় ধরনের পণ্যজট সৃষ্টি হতে পারে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট ১ হাজার ২৩০ মে. টন, ৯ আগস্ট ৬৬৭ মে. টন, ১০ আগস্ট ৮৯৮ মে. টন, ১২ আগস্ট ১০০ টন, ১৩ আগস্ট ৩ হাজার ৭৬৬ মে. টন, ১৬ আগস্ট ১ হাজার ১৯৯ মে. টন ও ১৭ আগস্ট ১ হাজার ৬০০ মে. টন চাল আমদানী হয়েছে। অর্থ্যাৎ গত ৭ দিনে ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৯ হাজার ৪৬০ মে. টন চাল আমদানী হয়েছে।

দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে ও দ্রুত চালের মজুদ বাড়াতে চাল আমদানিতে পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়। গত ৭ আগস্ট মিডিয়ায় এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই বন্দরে চাল খালাস বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা।

চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ ভাগ থাকায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে চালের আমদানি এতদিন প্রায় বন্ধ ছিল। মাঝে মধ্যে কয়েকটি ট্রাক করে চাল আমদানি হতো। পরে গত ২০ জুন চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ ভাগ থেকে কমিয়ে ১০ ভাগ নির্ধারণ করায় বন্দর দিয়ে চালের আমদানি বেড়ে যায়। বর্তমানে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১০০ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। বেনাপোল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট ফারুক হাসান জানান, চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় আমদানিকারকরা চাল খালাস করছেন না। ফলে বন্দরের ভেতরে চালের ট্রাক আটকা পড়ে আছে। আমদানিকারকরা ট্রাকগুলো থেকে চাল খালাস না নিয়ে শুল্কপ্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দেশের বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার চাল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে নেবেন এমন আলোচনা চলছে। গত কয়েকদিন ধরে এ সংক্রান্ত খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় বেনাপোল বন্দরের আমদানিকারকরা ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল খালাস করছেন না। কারণ সরকার চাল আমদানির শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। ফলে, বন্দরে তিন শতাধিক চালের ট্রাক আটকা পড়ে আছে।

তিনি আরও জানান, শুল্কপ্রত্যহারের এমন খবরে বন্দর দিয়ে চালের আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকাকরকরা। এদিকে আবার গত বুধবারে চাল আমদানিতে শুল্কহার ১০ ভাগ থেকে কমিয়ে ২ ভাগ করতে মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু এর কোন কাগজপত্র বা আদেশের কপি কাস্টমসে আসেনি। এতে করে আমদানিকারকরা দ্বিধায় আছেন।

বর্তমানে চাল আমদানিতে যে ১০ ভাগ শুল্ক আরোপ রয়েছে। ফলে প্রতি কেজি চালে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে। এখন সরকার যদি এই ১০ ভাগ শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে দেশের বাজারে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম জানান, আগে বেনাপোল বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ১০০ ট্রাক চাল আমদানি হতো এবং প্রতিদিনই সেসব চাল বন্দর থেকে খালাস হয়ে যেতো। কিন্তু চাল আমদানিতে আরোপিত ১০ ভাগ শুল্ক প্রত্যাহার করবে সরকার, এমন খবর প্রকাশের পর গত সোমবার থেকেই এই বন্দর থেকে চাল খালাস করছেন না আমদানিকারকরা।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মো. শওকাত হোসেন বলেন, ‘আমরাও শুনেছি চালের শুল্কহার হ্রাস করা হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো আদেশ পাইনি। আদেশ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/এজে/আগস্ট ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর