thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৫ শাওয়াল 1445

লজ্জার হারে বাংলাদেশের রেকর্ড

২০১৭ অক্টোবর ১৫ ২২:০২:৫৬
লজ্জার হারে বাংলাদেশের রেকর্ড

ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই চওড়ায় ব্যাট করে সব সমালোচনার ভালই জবাব দিয়েছিলেন মুশফিক। তাঁর ১১৬ বলে ১১০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ২৭৮/৭ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই সর্বোচ্চ সংগ্রহ বাংলাদেশের। কিন্তু বাংলাদেশের এই রেকর্ড রানকে অনায়াসেই টপকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কোনো উইকেট না হারিয়েই ২৮০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়েছে প্রোট্রিয়াসরা। ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। মুশফিকের বিশাল সংগ্রহ কোনো কাজেই আসেনি বোলারদের ব্যর্থতায়।ডি ককের ১৬৮ আর হাশিম আমলার ১১০ রানে ভর করে অনায়সেই ২৮২ রানে পৌছে যায় স্বাগতিকরা।

রানটা আরও বেশি হতে পারত বাংলাদেশের। হাতে উইকেট রেখে যখন ঝড় তোলার কথা, তখনই প্রত্যাশামতো ঝড়টা ওঠেনি। শেষ ৫ ওভারে মাত্র ৪১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। অথচ হাতে ছিল ৬ উইকেট। মুশফিকও ছিলেন উইকেটে। ছিলেন নাসিরও।

চোটের কারণে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছিলেন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। প্রথম ৫ ওভারে তাঁদের সংগ্রহ ছিল ১৫ রান। লিটন কিছুটা হাত খোলার চেষ্টা করেছিলেন। ২৯ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে কাগিসো রাবাদার শিকার হন তিনি। অন্য প্রান্তে ইমরুলও (৩১) আউট হয়েছেন ত্রিশের ঘর পেরিয়ে। ডুয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দেন তিনি। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ১৪ ওভার শেষে ৬৭/২।

এখান থেকে দলকে লড়াইয়ের ভিত্তি পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিং। তৃতীয় উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। বিশ্রাম শেষে ক্রিকেটে ফিরে ভালোই খেলছিলেন সাকিব। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে কিছুটা চমকে দেন তিনি। ২৯ রান করে ইমরান তাহিরের শিকার হওয়ার আগে ২০তম ওভারে প্রিটোরিয়াসের বলে ১ রান নিয়ে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ওয়ানডের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে পাঁচ হাজার রান ও ন্যূনতম ২০০ উইকেটের মাইফলক ছোঁয়ার কীর্তি গড়লেন র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় এ অলরাউন্ডার।

সাকিব আউট হলেও মুশফিক একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন। ওয়ানডেতে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমানের সঙ্গে দারুণ দুটি জুটি গড়েন মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬৯ এবং পঞ্চম উইকেটে সাব্বিরের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৭ বলে ২৬ রান করে প্রিটোরিয়াসের শিকার হন মাহমুদউল্লাহ। ২১ বলে ১৯ রান করা সাব্বিরকে তুলে নেন রাবাদা।

নাসিরও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১১ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডেতে অভিষিক্ত সাইফউদ্দিন শেষ দিকে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এক চার ও এক ছক্কায় ১০ বলে ১৬ রান করেন তিনি। তবে শেষ পাঁচ ওভারে সেভাবে রান না এলেও মুশফিকের উইলোয় ভর করে এগিয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকেট বইয়ের প্রায় সব ধরনের শটই খেলেছেন তিনি। প্রথাগত কভার ড্রাইভ, ডাউন দ্য উইকেটে এসে বোলারকে চার্জ করা, স্লগ সুইপ, স্কুপ এমনকি বুদ্ধিদীপ্ত সিঙ্গেলসও নিয়েছেন এ ব্যাটসম্যান।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির কীর্তি এখন মুশফিকের। প্রোটিয়াদের মাটিতে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরিয়ানও এখন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকলেও আক্ষেপ থেকে যাবে শেষ পাঁচ ওভার। এই ৩০ বলে যে মাত্র ৪১ রান এসেছে! নইলে তিন শো টপকে যেত বাংলাদেশ। আর তা না টপকানোতেই যে বাংলাদেশের এমন লজ্জা জনক পরাজয় তা বলা মুশকিল। চারশ’ পেরোলেই যে বাংলাদেশের সব রেকর্ড লজ্জায় ঢুবে যেত না তাও বলা যাবে না।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

ক্রিকেট এর সর্বশেষ খবর

ক্রিকেট - এর সব খবর