thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট হচ্ছে’

২০১৭ নভেম্বর ২১ ২০:২৯:৫৯
‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট হচ্ছে’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট ও ডাকাতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নিজেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা ট্রান্সফার করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বগুড়ায় আমার শিক্ষককে কিছু টাকা পাঠাতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গুনে গুনে ২ শতাংশ কেটে রেখেছে। তারপর সেখানে গিয়ে টাকা তুলতে গেলে তার কাছ থেকেও টাকা কেটে নিয়েছে। এই রকম লুটপাট ও ডাকাতি করছে। অথচ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কয়েক লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনেকগুলো এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কারণ এখানে কোনো নিয়ামক পরিমণ্ডল নেই।

ফরাসউদ্দিন বলেন, একটা রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়া যদি বাজার অর্থনীতি চালিত হয়, তবে প্রবৃদ্ধি হবে, বাণিজ্য ও শিল্পে প্রসার হবে। কিন্তু একটু চুরি-ডাকাতি বাড়বে, দুর্নীতি বাড়বে। বাংলাদেশে এখন তাই হয়েছে।

ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, আমি এর তীব্র নিন্দা করি, ধিক্কার জানাই। আমি এর সমালোচনা করি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর বলেন, দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধের জন্য একটা পরিমণ্ডল প্রয়োজন, বিচার-আচার করে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। যদি সমাজে একটা ঢেউ তুলতে পারি যে, দুর্নীতি ভালো জিনিস নয়, এটা রুখতে হবে। তবে এটা রোধ করা সম্ভব।

বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে বলে তিনি মত দেন। সুশীল সমাজ ও মিডিয়াকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে বলেন তিনি।
দেশে ই-কমার্সে কেনাকাটায় কর না থাকার সমালোচনা করে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ফরাসউদ্দিন বলেন, সেখানে ট্যাক্স বসানোর জন্য পাঁচ বছর ধরে বলছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

ব্যক্তি পর্যায়ে বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগেরও সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩৩ বিলিয়ন ডলার পড়ে আছে, বাংলাদেশের মুদ্রা অবমূল্যায়ন হতে বাধ্য। যখন অবমূল্যায়ন হবে তখন স্বল্প সুদেও হবে না, অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট নিয়ামক না থাকায় আগে বিদেশ থেকে যারা ঋণ এনেছিলেন তাদের ৯০ শতাংশই নানা কৌশলে অর্থ পাচার করেছে।

২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে বাংলাদেশ থেকে ছয় হাজার ৫০০ কোটি ডলার দেশ থেকে পাচার হয়েছে। দেশের ভেতরে বিনিয়োগে কিছু সমস্যা আছে, থাকতেই পারে। তাহলে কী দেশের বাইরে টাকা পাঠিয়ে দেবেন? শুধু বিচার-আচারের মাধ্যমে দুর্নীত দমন সম্ভব নয় বলে মনে করেন ফরাসউদ্দিন।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যান্যর মধ্যে কমিশনের দুই কমিশনার ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব শামসুল আরেফিন বক্তব্য দেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর