thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

মাওলানা সাদ দিল্লি ফিরে গেলেন

২০১৮ জানুয়ারি ১৩ ১৬:৩৪:৩৭
মাওলানা সাদ দিল্লি ফিরে গেলেন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: একপক্ষের বিরোধিতার মুখে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ না দিয়ে নিজ দেশ ভারতে ফেরত গেলেন তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি। তিনি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে শনিবার দুপুরে ঢাকা ছাড়েন।

ইমিগ্রেশন পুলিশের এক অতিরিক্ত বিশেষ সুপার বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে জেট এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে করে তিনি ভারত রওনা দিয়েছেন।’

গত তিন বছর ধরে বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসছিলেন মাওলানা সাদ কান্ধলভি। এর আগে হেদায়েতি বয়ান দিতেন তিনি। সেই অনুযায়ী চলতি বছরের ইজতেমায় যোগ দিতে গত ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসেন মাওলানা সাদ।

তাকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়া এই ইসলামিক সংঘের একপক্ষের কর্মীরা তাকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে বিক্ষোভ করার পর তাতে অনড় থাকলে পরদিন ১১ জানুয়ারি বিবদমান দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয় মাওলানা সাদ ইজতেমায় অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং ‘সুবিধাজনক সময়ে’ তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যাবেন।

এরপর শুক্রবার ইজতেমা শুরু হলেও কাকরাইলে মসজিদেই কাটান মাওলানা সাদ। সেখান থেকেই ফিরে যান তিনি।

তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব দিয়ে দিল্লির মারকাজ এবং দেওবন্দ মাদ্রাসার মধ্যে সম্প্রতি দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, যার প্রভাবেই বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের মধ্যে এই বিভক্তি।

বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতে মাওলানা সাদের বিরোধীরা তার ঢাকা আগমনের সময় বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান নিয়ে যে বিক্ষোভ করেন, তাতে রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে চলাচলকারীদের দিনব্যাপী যানজটের ভোগান্তিও পোহাতে হয়।

উপমহাদেশে সুন্নী মতাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় সংঘ তাবলিগ জামাদের মূলকেন্দ্র ভারতের দিল্লিতে। মাওলানা সাদের দাদা ভারতের ইসলামি পণ্ডিত ইলিয়াছ কান্ধালভি ১৯২০ এর দশকে তাবলিগ জামাত নামের এই সংস্কারবাদী আন্দোলনের সূচনা করেন।

স্বেচ্ছামূলক এ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ইসলামের মৌলিক মূল্যবোধের প্রচার। বিতর্ক দূরে রাখতে এ সংগঠনে রাজনীতি ও ফিকাহ নিয়ে আলোচনা হয় না।

মাওলানা ইলিয়াছের মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ এবং তারপর মাওলানা ইনামুল হাসান তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা ইনামুলের মৃত্যুর পর একক আমিরের বদলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দেওয়া হয় একটি শুরা কমিটির ওপর।

মাওলানা জুবায়েরের মৃত্যুর পর মাওলানা সাদ আমিরের দায়িত্ব নেন এবং একক নেতৃত্বের নিয়ম ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু মাওলানা জুবায়েরের ছেলে মাওলানা জুহাইরুল হাসান তখন নেতৃত্ব্রে দাবি নিয়ে সামনে আসেন এবং তার সমর্থকরা নতুন করে শুরা কমিটি গঠনের দাবি জানান। কিন্তু সাদ তা প্রত্যাখ্যান করলে বিরোধ বড় আকার ধারণ করে।

তবে বাংলাদেশে সাদ সমর্থক তাবলিগের নেতারা বলছেন, ভারতে দ্বন্দ্ব মিটে গেলেও মাওলানা সাদের বিভিন্ন বক্তব্যে স্বার্থে আঘাত আসতে পারে বলে বাংলাদেশে তার বিরোধিতা করেছে কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদের একটি শাখার আমির মিজানুর রহমানের ভাষ্য, ‘যাকাতের পয়সা গরিবদের হক, মাদ্রাসায় ব্যবহার করা যাবে না’ বলে দেওয়া মাওলানা সাদের বক্তব্যে স্বার্থে টান পড়েছে হেফাজতের।

সাদ সাহেব কিছু হক কথা বলেছেন, ফলে তাদের ব্যবসা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। সেজন্য তারা উনার বিরুদ্ধে গেছে বলেন তিনি।

তবে এ অভিযোগ নাকচ করে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘ওলামায়ে কেরাম, যারা ইসলামী ধ্যান ধারণা ধারণ করেন, তারাই আন্দোলন করেছেন। তাবলিগের বিরোধী কোনো বক্তব্য আমরা দিইনি। আমিও তাবলিগে যাই। এর সাথে হেফাজতের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ১৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর