thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

ঢাবি উপাচার্যের দরজায় আন্দোলনকারীরা

২০১৮ জানুয়ারি ২৩ ১৭:২৯:৫০
ঢাবি উপাচার্যের দরজায় আন্দোলনকারীরা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেছেন ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে উপাচার্য কার্যালয়ের অন্তত তিনটি ফটক একে একে ভেঙে বেলা দেড়টার দিকে উপাচার্যের দরজার সামনের করিডোরে অবস্থান নেন তারা।

গত সপ্তাহ থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে। পরে মিছিলটি টিএসসি, কলাভবন, বিজনেস ফ্যাকাল্টি, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ঘুরে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে আসে।

সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকা শিক্ষার্থীরা এক সময় উপাচার্য কার্যালয়ের প্রধান ফটক ধরে ধাক্কা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বেলা ১২টার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ে প্রধান ফটকের দুটি তালা ভেঙে কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে যায় তারা।

বেলা ১টার দিকে উপাচার্য কার্যালয় ভবনের কলাপসিবল গেটও ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা দেড়টার দিকে ভবনের ভেতরের আরেকটি গেইট ভেঙে উপাচার্যের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন তারা।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখা শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান তার কার্যালয়েই অবস্থান করছেন।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে গত ১৫ জানুয়ারির আন্দোলন কর্মসূচিতে ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের ‘নিপীড়নের’ প্রতিবাদে আন্দোলনের সামনে আসে নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীরা।

নিপীড়নে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের দাবিতে গত ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ও ঘেরাও করে তারা।

এছাড়া ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ‘হামলার’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার দাবিও রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

তবে প্রক্টর কার্যালয় ঘেরাওয়ের সময় ফটক ভাংচুরের ঘটনায় পরদিন ১৮ জানুয়ারি অজ্ঞাত নামা ৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা দায়ের করে প্রশাসন। এর প্রতিবাদে ওইদিন মধ্যরাতে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাওয়ে আসা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মাসুদ আল মাহাদী প্রশাসনের মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘১৫ তারিখের নিপীড়নের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের যে দাবি, সেই দাবি জানাতে আমরা প্রক্টর অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রক্টর ব্যর্থ হয়ে উপাচার্যের কাছে নিয়ে আসে।’

‘উপাচার্যের কাছে যে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম তা বাস্তবায়ন হয়নি; বরং অজ্ঞাতনামা ৫০ জন শিক্ষার্থীর ওপর মামলা করেছে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মাহাদী বলেন, ‘মামলা যদি করতেই হয় তাহলে অজ্ঞাতনামা কেন? আমরা তো আন্দোলনে আছি। আমাদের গ্রেপ্তার করুন।’

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ওই মামলা প্রত্যাহারসহ সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি সমস্যাও সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন তিনি।

এদিকে নিপীড়নের অভিযোগের তদন্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তাতে সাক্ষ্য দিতে ৩ শিক্ষার্থীকে ডেকেছিল; কিন্তু তারা আসেননি।

রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ জিনাত হুদাকে আহ্বায়ক করে তৈরি তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছে সহকারী প্রক্টর আবু হোসেন মো. আহসান এবং সদস্য চন্দ্রনাথ পোদ্দার।

কমিটির সদস্য সচিব আবু হোসেন মো. আহসান বলেন, ‘আমরা আবু রায়হান খান, উম্মে হাবিবা বেনজির ও আশিক নামে তিনজন শিক্ষার্থীকে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ডেকেছি। সোমবার ফোন দেওয়ার পর সকালে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ওরা আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগে নাম দেয়া হয়নি, শুধু তিনজন প্রতিনিধির নাম দিয়েছে। তাই আমরা তাদের বক্তব্যের জন্য ডেকেছি।’

তবে তাদেরকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ডাকা হয়েছিল জানিয়ে ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, ‘কিন্তু আমরা প্রত্যক্ষদর্শী নই। আমরা তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি তদন্ত কমিটিতে থাকতে চেয়েছি। কিন্তু আমাদের রাখা হয়নি।

‘আর আল্টিমেটাম শেষ হবার পর আমাদের ডাকা হয়েছিল। এসব কারণে আমরা এই তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ২৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর