thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল 24, ১০ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৪ শাওয়াল 1445

ভয়ে বারবার আঁতকে উঠছেন শাহরিন

২০১৮ মার্চ ১৬ ০৮:৩৩:১৯
ভয়ে বারবার আঁতকে উঠছেন শাহরিন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের জীবিত যাত্রী শাহরিন আহমেদকে বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি এখন ট্রমায় ভুগছেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় কথা মনে করে বারবার আঁতকে উঠছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে প্রধান সমন্বয়কারী সামন্তলাল সেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল হক খান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম, সাজ্জাদ খন্দকার প্রমুখ।

শাহরিনকে বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা সম্পর্কে সামন্তলাল বলেন, শাহরিনকে বার্ন ইউনিটের ৫ নম্বর বেডে রাখা হয়েছে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মতো এত বড় একটি দুর্ঘটনার ধকল শাহরিনের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। তাই তিনি মেন্টালি ট্রমায় রয়েছেন। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। শরীরে ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ডান পায়ে আঘাত রয়েছে।’

কাঠমান্ডু থেকে বিমান বাংলাদেশের বিজি-০৭২ ফ্লাইটটি শাহরিনকে নিয়ে বিকাল ৩টা ৪৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে ৫টা ৫ মিনিটে ঢামেকে যায় শাহরিনকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি।

সোমবার (১২ মার্চ) কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ১০ বাংলাদেশির মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক ইমরানা কবির হাসি। অন্যদের অবস্থা স্থিতিশীল।

বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে ২৯ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষক শাহরিন আহমেদই প্রথম দেশে ফিরলেন। তিনি কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে (কেএমসি) হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শাহরিনের বাবা মোস্তাক আহমেদ রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসের ৪ নম্বর রোডের ৩১৪ নম্বর বাসায় থাকেন।

এর আগে দুপুর ২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে শাহরিনকে ঢাকায় আনার কথা জানান বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের(বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আহতদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে কেউ হয়তো দেশে ফিরবে বা কেউ সিঙ্গাপুর যাবে। এটা সময়ই বলে দেবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে তার পরিবার বা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।’

এম নাইম হাসান বলেন, ‘মরদেহগুলোও এখন আস্তে আস্তে চলে আসবে। একসঙ্গে আসার সম্ভাবনা কম। কারণ, মরদেহগুলো একের পর এক ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে এবং চিহ্নিত করা হচ্ছে। গতকাল রাত পর্যন্ত ১৯ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ বা নেপাল আলাদা করা হচ্ছে না। সিরিয়াল অনুযায়ী মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হয়তো নিহত বাংলাদেশিদের ময়নাতদন্ত বা আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হলে আগেই চলে আসবে।’

বেঁচে যাওয়া অন্যদের অবস্থা
বিমান দুর্ঘটনায় আহত রুয়েটের শিক্ষক ইমরানা কবির হাসিকে কেএমসি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসির শরীরের শতকরা ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে, তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তার সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন থাকলেও সেখান থেকে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা এখন নেই।

গত বুধবার রাতে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডা. রেজওয়ানুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। কাঠমান্ডুর ওম হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের আইসিইউ থেকে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যান তার বাবা মোজাম্মেল হক। নরভিক হাসপাতালে আইসিইউতে থাকা ইয়াকুব আলীকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন পরিবারের সদস্যরা।

কেএমসিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন শেখ রশীদ রুবায়েত। তার অবস্থা কিছুটা ভালো। আহত মো. কবীর হোসেইনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আর আলমুন নাহার অ্যানি, সৈয়দা কামরুন্নাহার স্বর্ণা, মেহেদী হাসান ও মো. শাহীন ব্যাপারীকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা আজ আসছেন বলে জানা গেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ১৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর