thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

কুমিল্লায় সিজারের সময় নবজাতককে দ্বিখণ্ডিত!

২০১৮ মার্চ ২৪ ২২:১৬:১০
কুমিল্লায় সিজারের সময় নবজাতককে দ্বিখণ্ডিত!

কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে প্রসূতির অপারেশনের সময় এক নবজাতকের মাথা কেটে দ্বিখণ্ডিত করেছেন চিকিৎসেকরা। একইসঙ্গে প্রসূতি মা জুলেখা বেগমের (৩০) জরায়ুও কেটে ফেলেছেন তারা।

প্রসূতির জীবন রক্ষার জন্যই এমন কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। ঘটনাটি এক সপ্তাহ আগে ঘটলেও শনিবার (২৪ মার্চ) বিষয়টি জানানো হয়।

জুলেখা বেগম কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সফিক কাজীর স্ত্রী। এখনও তিনি কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ রাতে প্রসববেদনা নিয়ে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি হন জুলেখা বেগম। পরদিন ১৮ মার্চ দুপুরে অপারেশন থিয়েটারে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. করুনা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল জুলেখা বেগমের অপারেশন করেন। এ সময় ডা. করুনা রানী কর্মকার ছাড়াও ডা. নাসরিন আক্তার পপি, ডা. জানিবুল হক, ডা. দিলরুবা শারমিন ও ডা. আয়েশা আফরোজ অংশ নেন।

প্রসূতির স্বামী সফিক কাজী অভিযোগ করেন, প্রসববেদনায় ছটফট করলেও ১৭ মার্চ তার স্ত্রীকে অপারেশনের কোনও উদ্যোগ নেননি ডাক্তাররা। পরদিন দুপুরে জুলেখার অপারেশন করা হয়। এ সময় তাদের নবজাতক ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন এবং জুলেখা বেগমের জরায়ু কেটে ফেলা হয়।

সফিক কাজী বলেন, ‘ওইদিন হাসপাতালের একজন দারোয়ান এসে আমার কাছে মৃত নবজাতককে মাটিচাপা দেওয়ার জন্য ৫শ’ টাকা চান। আমি ৩শ’ টাকা দেই। পরে ওই দারোয়ান হাসপাতালের বারান্দা দিয়ে নবজাতকের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই, আমার সন্তানের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ সময় আমি মোবাইল ফোনে দ্বিখণ্ডিত নবজাতকের ছবি তুলে রাখি। এরপর দারোয়ান হাসপাতালের অদূরে নিয়ে নবজাতককে মাটিচাপা দেয়।’

শনিবার কুমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের অতিরিক্ত বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জুলেখা বেগম।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ডাক্তাররা আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। হাসপাতালে আসার পরও আমার পেটে সন্তান নড়াচড়া করছিল। আমি সিজারের কথা বললেও তারা (ডাক্তার) রাতে সিজার করেনি। ডাক্তার আমার জরায়ুপথে পেটের ভেতর হাত দিয়ে টানাটানি করে আমার সন্তান নষ্ট করে ফেলেছে।’

অপারেশনে অংশ নেওয়া ডা. নাসরিন আক্তার পপি, ডা. আয়েশা আফরোজ, ডা. জানিবুল হক, ডা. দিলরুবা শারমিন দাবি করেন, ‘প্রসূতির গর্ভের সন্তান মৃত ও অস্বাভাবিক পজিশনে ছিল। তাই দেহ ও মাথা বিচ্ছিন্ন করে আলাদাভাবে শিশুটিকে বের করা হয়েছে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা জরায়ু কেটে ফেলি। অপারেশনের আগে এ সব বিষয়ে প্রসূতির স্বামীর অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এতে ডাক্তারদের কোনও অবহেলা ছিল না।’

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রসূতির জীবন রক্ষার্থে ডাক্তাররা অপারেশন করে গর্ভের সন্তান দুই খণ্ডে বের করে আনেন। এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সঠিক কি-না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ২৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর