হাত ঘড়ি দিয়ে এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: হাত ঘড়ির সঙ্গে বিশেষ মিনি কার্ড রিডার সংযুক্তির মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করতেন শরিফুল ইসলাম (৩৩)।

এটিএম বুথে কার্ড ব্যবহারের সময় গ্রাহক যখন পিন নম্বর দিতো তখন কৌশলে সেটিও টুকে নিয়ে বিলের রি-প্রিন্ট দিয়ে ওই কপির পেছনে লিখে রাখতেন তিনি। বুথের সিসিটিভি ক্যামেরায় যেন ধরা না পড়ে সেজন্য প্রতারক শরিফুল মাথায় পরচুল এবং চোখে চশমা ব্যবহার করতেন।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোল্লা নজরুল ইসলাম বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

সম্প্রতি ৫টি ব্যাংকের কার্ড জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর থেকে শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সুপারশপ স্বপ্নের কর্মী হলেও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন ছিল মূল পেশা। অবৈধভাবে অর্জিত টাকায় কেনা টয়োটা এলিয়ন মডেলের গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে এ পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

এ সময় তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের ১ হাজার ৪০০টি ক্লোন কার্ড, একটি ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ কার্ড রিডার ও রাইটার, তিনটি পজ মেশিন, গ্রাহকদের তথ্য চুরিতে ব্যবহৃত সচল ডিজিটাল হাত ঘড়ি, দুটি মিনি কার্ডরিডার ডিভাইস, পাসপোর্ট ১৪টি, ৮টি মোবাইল ফোন, ডাচ বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস ক্রেডিট কার্ড একটি ও ৩টি এনআইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইবিএল, ইউসিবিএল ও ব্যাংক এশিয়ার কার্ড জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

তদন্তে জানা গেছে, ব্যাংকের গ্রাহকরা যখন বিভিন্ন সুপার শপ ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে পণ্য ক্রয়ের পর কার্ড পাঞ্চ করার সময় একটি চক্র সুকৌশলে গ্রাহকদের তথ্য চুরি করে ক্লোন কার্ড তৈরি করে এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরি করে নিচ্ছে। ওই ঘটনার মূল হোতা শরিফুলকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রতারক শরিফুল ইসলাম সুপারশপ স্বপ্নের বনানী শাখায় কাজ করতেন। নিজের হাত ঘড়িতে থাকা বিশেষ স্ক্যানিং ডিভাইজের মাধ্যমে তিরি গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করতেন। এরপর বাসায় গিয়ে তার ল্যাপটপ এবং ডিভাইসের মাধ্যমে কাস্টমারের তথ্যাবলি ভার্জিন কার্ড বা খালি কার্ডে স্থাপন করে ক্লোন এটিএম কার্ড বানাতেন। পরে যে কোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিতেন। বুথে টাকা তোলার সময় সিসি ক্যামেরায় যাতে তাকে চেনা না যায় সে জন্য প্রতারক শরিফুল পরচুলা এবং চশমা ব্যবহার করতেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ২৫, ২০১৮)