thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ জেলায় নিহত ৯

২০১৮ মে ২৪ ০৮:৫১:৪০
‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ জেলায় নিহত ৯

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের ছয় জেলায় পুলিশ ও মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মাগুরায় দুইজন, ফেনীতে দুই, কুমিল্লায় দুই, আখাউড়ায় এক, নারায়ণগঞ্জে ও সাতক্ষীরায় একজন। এ সময় আহত হয়েছে নয় পুলিশ।

বুধবার (২৩ মে) দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) ভোর পর্যন্ত এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

মাগুরা : মাগুরায় দু’দল মাদক বিক্রেতার মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দু’জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে মাগুরা সদর থানার পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন- মাগুরা পৌর এলাকার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী আইয়ুব হোসেন (৫০) অপরজন ভায়না টিটিডিসিপাড়ার মাদক বিক্রেতা মিজানুর রহমান কালু (৪৩)।

সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার মধ্যরাতে মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালি হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় এলাকায় দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। মাগুরা সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় নিহত আইয়ুবের নামে ১৮টি এবং কালুর নামে ২১টি মাদকের মামলা রয়েছে।

ফেনী : ফেনীর ফুলগাজীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন; যাদেরকে মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার সীমান্তবর্তী জাম্বুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-সামিরান শামীম উপজেলার আনন্দপুর মাইজ গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফার ছেলে ও অপরজন মনতলা গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া ওরফে মনির।

ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (ওসি) হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক বিক্রেতারা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই মাদক বিক্রেতা আহত হয়। পরে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে ২০০ বোতল ফেনসিডিল ও ৭০০ পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল ও একটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে থানায় ১০টিরও বেশি করে মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

কুমিল্লা : জেলায় পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন; যাদেরকে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করছে।

নিহতরা হলেন- বাবুল প্রকাশ ওরফে লম্বা বাবুল (৩৮) এবং রাজিব (২৮)।

নিহত বাবুল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বৈদ্দেরখিল গ্রামের হাফেজ আহাম্মদের ছেলে এবং রাজিব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি সংলগ্ন চাঙ্গিনী গ্রামের মৃত শাহ আলমের ছেলে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. আবুল ফয়সাল গণমাধ্যমকে জানান, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর এলাকার রামরায় এলাকা থেকে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বাবুলকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার একটি মাদকের চালান উপজেলার আমানগন্ডা এলাকায় রয়েছে। পরে বাবুলকে নিয়ে আমানগন্ডার নতুন রাস্তার মাথার মন্তাজের বাগানে রাত ১টার দিকে অভিযানকালে বাবুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গোলাগুলিতে বাবুল ছাড়াও থানার এসআই মোজাহের, কনস্টেবল মিজান ও ফরিদ আহত হয়। পরে আহত বাবুলকে আশংকাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

নিহত বাবুলের বিরুদ্ধে মাদক আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

অপরদিকে জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, রাত সোয়া ২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন ট্যাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা একটি প্রাইভেটকারে মাদকদ্রব্য নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রাজিব (২৫) ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশও গুলি চালায়। এতে গুলিবিব্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন রাজিব। এছাড়াও থানার ওসি নজরুল ইসলাম, থানার এসআই শামসুদ্দিন ও এসআই অঞ্জন কুমার নাহা আহত হন। আহত রাজিবকে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজসহ একটি এলজি, ৫০ বোতল ফেনসিডিল এবং ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, নিহত রাজিবের বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আখাউড়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাদক ও হত্যা মামলার এক আসামি নিহত হয়েছেন।

নিহত আমির উপজেলার চানপুর এলাকার মৃত সুরুজ খাঁর ছেলে।

আখাউড়া থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদার গণমাধ্যমকে জানান, রাতে পুলিশের একটি দল বনগজ স্টিল ব্রিজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার মোড়ে মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। এসময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আমির খাঁ ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় সহযোগীদের গুলিতে আমির খাঁর মৃত্যু হয়। নিহত আমিরের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি ও একটি হত্যা মামলাসহ ১২টি মামলা রয়েছে। এ সময় আখাউড়া থানা পুলিশের এএসআই ও দুজন কনস্টেবল আহত হয়েছে। তাদের আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি কাতুর্জ, একটি রামদা, ১০ কেজি গাঁজাসহ আটটি স্কফ সিরাপ উদ্ধার করেছে বলে দাবি পুলিশের।

নারায়ণগঞ্জ : সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তার নাম সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিম। বৃহস্পতিবার ভোর ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের দক্ষিণ নিমাইকাসারী ক্যানেলপাড় বজলুখানের খালি জায়গায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

নিহত সেলিম ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারী বাঘমারা এলাকার আবুল কাশেম ওরফে গাঞ্জা কাশেমের ছেলে।

পুলিশের দাবি, কাশেম এলাকায় গাঁজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। সেলিমের মা মর্জিনা বেগমও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৫টি মাদক মামলা রয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুস সাত্তার গণমাধ্যমকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেন্সি সেলিমকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে মৌচাক এলাকায় অভিযানে গেলে সেলিম ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। রাত আড়াইটা থেকে প্রায় ৩০ মিনিট পুলিশের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। এসময় ঘটনাস্থলেই সেলিম নিহত হয় ও পুলিশের ছয়জন আহত হয়। আহতরা খানপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান ওসি।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ফেনসিডিলসহ অজ্ঞাতপরিচয় (৪০) এক মাদক বিক্রেতার গুলিবিদ্ধ লাশ পেয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া এলাকা থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ বলছে, লাশের পাশে একটি থলেতে ৪৮ বোতল ফেনসিডিল ছিল।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সকালে স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে চৌবাড়িয়া এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ একটি মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় এক বস্তা ফেনসিডিল, একটি রিভলবার, একটি বন্দুকের গুলির খোলা ও একটি রাইফেলের গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, চৌবাড়িয়া-খানজিয়া সীমান্ত এলাকাটি চোরাচালান রুট হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে কোনো মাদক বিক্রেতা গ্রুপ নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে তাকে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে আরও অধিকতর তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ২৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর