thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

সেনা হাসপাতালে তাদের আস্থা নেই: তোফায়েল

২০১৮ জুন ১৮ ১৯:৫৫:৩৩
সেনা হাসপাতালে তাদের আস্থা নেই: তোফায়েল

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নির্বাচনে সেনা দাবি করলেও সেনা হাসপাতালে তাদের (বিএনপির) আস্থা নেই উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল এবং সিএমএইচ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত।

বিএনপি কথায় কথায় নির্বাচনে সেনাবাহিনী চায়, সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলে, অথচ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর হাসপাতালের ওপর (সিএমএইচ) তাদের কোনো আস্থাই নেই।

ঈদের ছুটি শেষে সোমবার সচিবালয়ে প্রথম কর্মদিবসে যোগ দিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ইস্যুতে এভাবেই দলটির নেতাদের নানা অভিযোগের জবাব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার স্বার্থে অসুস্থ রোগীকে যে হাসপাতালে নেয়া হবে সেখানেই যাওয়ার কথা। আমি বুঝি না একজন অসুস্থ মানুষ তার পছন্দের হাসপাতাল না হওয়ায় চিকিৎসার জন্য কীভাবে সময়ক্ষেপণ করেন?

এর আগে নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী। সারাজীবন তিনি সিএমএইচে চিকিৎসা নিয়েছেন, সেনানিবাসে বসবাস করেছেন, অথচ এখন সেই সেনা হাসপাতালেই তার আস্থা নেই। রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় হাসপাতালের চিকিৎসার ওপর তাদের আস্থা নেই। এখন তো খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়েই নানা প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে। অনেকে তো মনে করছেন তিনি অসুস্থ নন। কারণ অসুস্থ মানুষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে এত সময়ক্ষেপণ করতে পারেন না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে এবং মোহাম্মদ নাসিম ল্যাব এইডে চিকিৎসা নিতে পারলে খালেদা জিয়া কেন ইউনাইটেডে যেতে পারবেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘আমাদের নেত্রীকে সংসদের যে বাড়িতে জেলখানা বানিয়ে রাখা হয়েছিল তার কাছাকাছি হাসপাতাল স্কয়ারই ছিল। তাই তৎকালীন কর্তৃপক্ষ সেখানে তাকে নিয়েছেন। স্কয়ার আমাদের নেত্রীর পছন্দের হাসপাতাল ছিল না। সিএমএইচে অ্যালাও করলে কেউ স্কয়ারে যায় না। কর্তৃপক্ষ যেখানে নিয়েছেন সেখানে গেছেন। আর নাসিমকেও তৎকালীন কর্তৃপক্ষ ল্যাবএইডে চিকিৎসা করিয়েছেন। কাজেই শেখ হাসিনার স্কয়ার হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট আর খালেদা জিয়ার ইউনাইটেডে ট্রিটমেন্ট করতে চাওয়ার কোনও তুলনা হতে পারে না।’ নিজের বন্দিজীবনের কথা উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, আমি যখন বন্দি ছিলাম তখন ডা. দ্বীন মোহাম্মদ আমাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সিএমএইচে রেফার করেছিলেন। আমার মেয়ের জামাই ডা. তৌহিদুর রহমান আমাকে সেখানে ভর্তি করার সব ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তারা যখন জানতে পারল আমি আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, তখন তারা আমাকে ভর্তি নেয়নি। এমনকি জামিনও দেয়নি, চিকিৎসার জন্য বিদেশও যেতে দেয়া হয়নি।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে আদালত খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছেন। এ জন্য তিনি জেলে আছেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। দলের নেতারা তার মুক্তির জন্য কাজ করছেন। তারা এ মুক্তির জন্য আন্দোলনও করতে পারে। কিন্তু সেই আন্দোলন যদি ২০১৩, ২০১৪ সালের মতো করার কথা ভাবে তার সুযোগও নেই, সামর্থ্যও নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে দেবে না। কাজেই আগের মতো আন্দোলনের চিন্তা করা হবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার মতো আরেকটি ভুল। ওই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কারণে বিএনপির এই নাজুক অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করেছি। আমাদের দলের সংসদ সদস্যরা আইপিও, সিপিও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্ববাসী এই নির্বাচনের স্বীকৃতি দিয়েছেন আমাদের দলের নির্বাচিত সদস্যদের এসব সংস্থার সদস্য করে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন শেখ হাসিনার পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরবেন না। কিন্তু খালেদা জিয়া ঘরে ফিরেছিলেন আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। আর শেখ হাসিনা বিশ্বদরবারের সম্মান নিয়ে এখন বাংলাদেশ পরিচালনা করছেন।

ঈদের পরে বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন সম্পর্কে তোফায়েল বলেন, সরকারকে সরানোর মতো আন্দোলনের সক্ষমতা বিএনপির নেই। আন্দোলন করে ২০১৩, ২০১৪ সালে যেমন ব্যর্থ হয়েছেন, ২০১৮ সালেও ব্যর্থ হবেন। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ আছে। এর ৯০ দিন আগে যে কোনো দিন নির্বাচন হবে। ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্র পরিচালনা করবে সেই সময়, ক্ষমতায় থাকবেন। আর বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তারা যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চায়, তা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। সহায়ক সরকার বলতেও কিছু আছে বলে বিশ্বে কোনো কিছু শোনা যায় না। তাই এই নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি দল হিসেবেই হারিয়ে যাবে। বাণিজ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এবারের ঈদ ভালো হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ গ্রামে গেছেন। সরকারের সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা সাহায্য করেছি। অনেকে মনে করেন, সামনে নির্বাচন তাই সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। এটা ঠিক না। আমি প্রতি বছরই সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য-সহযোগিতা করি। আমি অবাক ও বিস্ময়ের সঙ্গে এবার লক্ষ করেছি, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের যে তৎপরতা ছিল অন্য কোনও দলের সে তৎপরতা চোখে পড়ে নাই। যারা আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তারাও এলাকায় যাননি। কেন এটি হলো তা আমি জানি না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের মানুষ আমাকে বলেছেন, এবার নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় ছিল। রোজার সময় এত পণ্যের মজুদ রেখেছি যাতে দাম বাড়েনি। তাই বাজার এবার স্বাভাবিক ছিল বলে গ্রামবাসী আমাকে জানিয়েছেন। সাংবাদিকরাও ভালো সংবাদ পরিবেশ করেছেন। এ জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ১৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর