thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

সিলেটে বিএনপিকে ছাড় দিচ্ছে না জামায়াত

২০১৮ জুলাই ০৫ ০০:১৯:০৫
সিলেটে বিএনপিকে ছাড় দিচ্ছে না জামায়াত

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক :সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে ছাড় দিচ্ছে না জামায়াত। ২০ দলীয় জোটের বুধবারের ( ৪জুলাই) শীর্ষ বৈঠকে কোনো রকম সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সিলেটে বিএনপিকে ছাড় দেবে না জামায়াত। মেয়র পদে আমাদের প্রার্থী থাকবে, এটা আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত।’

২০ দলীয় জোটের বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে রাজশাহী ও সিলেটে দলীয় প্রার্থী দেয় জামায়াত। রাজশাহীতে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে জামায়াত সমর্থন দিলেও সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরীর পাশাপাশি মহানগর জামায়াত আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন।

২০ দলের শীর্ষনেতাদের নিয়ে বুধবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশান চেয়ারপারসন কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার আন্দোলনসহ আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন আলোচনায় গুরুত্ব পায়। বৈঠকের মধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন দেন। সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি তিন সিটিতে একক প্রার্থী নির্ধারণে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের আহ্বান জানান। একথাটিই মির্জা ফখরুল জোটের শীর্ষনেতাদের অবহিত করেন। বিশেষ করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানানোর জন্য জামায়াতের প্রতিনিধি মাওলানা আব্দুল হালিমকে অনুরোধ করেন বিএনপি মহাসচিব।

কিন্তু আব্দুল হালিম বৈঠকে সাফ জানিয়ে দেন,‘…সিলেটে জামায়াতের প্রার্থী থাকবে, এটা আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। সাংগঠনিকসহ সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ নির্বাচনে আমরা অংশ নেব। এটা স্থানীয় নির্বাচন। সাংবাদিকরা কিছুদিন লিখবে, এরপরেই সব ঠিক হয়ে যাবে। জোটের রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।’

বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি মহাসচিব ও জামায়াত নেতা আব্দুল হালিমের মধ্যে যখন সিলেটে ২০ দলের একক প্রার্থী নিয়ে কথাবার্তা চলছিল তখন জোটের এক শরিক দলের মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী ‘সিলেটে জামায়াতকে ছাড় দেওয়া যায় কিনা-বিবেচনায় নেওয়া যায় কিনা, নিজের মতামত দেন। এসময় জোটের একাধিক শীর্ষনেতা বলেন, বিএনপি এবং জামায়াত জোটের সবচেয়ে বড় দুই দল। যেহেতু প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় রয়েছে তাই এই দুই দল একক প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে মতামত দেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা সিলেট সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের তিক্ততা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এদিকে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন,
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে জোট শরিক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির টানাপড়েনের প্রশ্নই ওঠেনি। ওই সিটি করপোরেশনে তারা বিএনপিকে ‘ছাড় দেবে না’ বলে সংবাদমাধ্যমের খবরের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সেটা তাদের বক্তব্য। আমাদের ২০ দলের বক্তব্য হচ্ছে, আমরা একক প্রার্থী নিয়েই নির্বাচন করব।”

সেক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াতের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে আপনারা কী করবেন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, “এটা নির্ভর করবে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তখন আপনারা জানতে পারবেন। তবে আমরা সিলেটে যে প্রার্থী দিয়েছি (আরিফুল হক চৌধুরী) সেটাকে ২০ দল ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।”

সেখানে প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের টানপোড়েনের শঙ্কা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোনো টানাপোড়েন হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রশ্নই ওঠেনি। যে কারণে আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের রেজ্যুলেশনের লক্ষ করেছেন যে, আমরা ২০ দল একত্রিতভাবেই কাজ করব।”

বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিও একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার বিষয়ে দলের সম্মতি দিয়েছেন বলে জানান ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় এখনও শেষ হয়নি। আমরা বলেছি যে, প্রার্থী একজনই থাকবেন।

বৈঠকে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা ছাড়াও জোটের শরিক বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মুর্তজা, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এমদাদুল হক চৌধুরী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা রেজাউল করীম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। (দ্য রিপোর্ট/টিআইএম/৪ জুলাই,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর