thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল 24, ৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ১১ শাওয়াল 1445

ডাক্তারের অবহেলায়  রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ফের

২০১৮ জুলাই ২১ ১৬:৫৬:৫৩
ডাক্তারের অবহেলায়  রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ফের

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরা আফরোজের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তার অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

ডা. মনিরা আফরোজের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েশনিবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবারের সদস্যরা।

মৃত আবু সাইদ (৬০) কালিহাতী উপজেলার চর ভাবলা গ্রামের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ছেলে শহিদুল ইসলাম শান্ত লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ জুলাই সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় আমারবাবাকে সাপে কামড়ায়। দুপুর ২ টা ২৫ মিনিটে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরা আফরোজের অধীনে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির সময় বাবার পায়ের দুটি পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হয় এবং বলা হয় হাসপাতালে সাপে কাটার ভ্যাকসিন নেই।

শহিদুল ইসলাম শান্ত কালিহাতী উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরিফ হোসেন খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাপে কাটার ভ্যাকসিন না থাকার বিষয়টি জানালে তিনি হাসপাতালে ভ্যাকসিন আছে বলে আমাকে নিশ্চিত করেন। সাপে কাটার ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জন নিজে কর্তব্যরত ডাক্তারের সাথে কথা বলেন এবং হাসপাতালের সহকারী পরিচালককেও বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, সিভিল সার্জন ফোনে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ডা. মনিরা আফরোজ। সিএস বললেই দিতে হবে, আপনি হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলেন বলে সাফ জানিয়ে দেন কর্তব্যরত ওই ডাক্তার। তখন আমি হাসপাতালের সহকরী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সদর উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলি। তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। এসময় তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে জানান, আরএমও’র সাথে কথা বলছি, ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

‘‘পরে আমি ডা. মনিরা আফরোজের সাথে দেখা করলে তিনি বলেন, আরএমও’র সাথে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু আমি এন্টি স্নেক ভেনম ভ্যাকসিন দিতে পারবো না। পরবর্তীতে বিকেল ৫টার দিকে তিনি আমার বাবাকে ঢাকা অথবা ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিয়ে যাই। ময়মনসিংহ হাসপাতালে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে ভর্তি করানো হয়। পরে ৮টা ১৫ মিনিটে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।’’

পরিবারের সদস্যরা কান্না বিজড়তি কণ্ঠে বলেন, যার কারণে আমরা আমাদের অভিভাবক হারালাম তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তারের অবহেলার কারণে আর কোন মানুষের মৃত্যু না হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মনিরা আফরোজ বলেন, সিভিল সার্জন আমাকে ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশ দিলেও সেটিংসের কারণে আমি দিতে পারিনি। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন খান বলেন, আমি ওই ডাক্তারকে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য মোবাইল ফোনে বলেছিলাম। ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। অবশ্যই ডা. মনিরা আফরোজের এ বিষয়ে অবহেলা রয়েছে। কারণ তিনি প্রথমে স্বীকার করেন নাই ভ্যাকসিন আছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নিহত আবু সাইদের স্ত্রী শরিফা বেগম, বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম শান্ত, ছোট ছেলে সোহেল রানা, মেয়ে শান্তা ইসলাম, টাঙ্গাইল স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখ।

চলতি মাসে ৩ তারিখে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডা. চিকৎসক ডা: আফরোজা আক্তার জাহানের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে ওই দিন রাতেই নবজাতকের পিতা ফারুক হাসান টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রুজু না করায় আদলতে দ্বারস্থ হোন তিনি । পরে আদালত বিষয়টি আমুলে নিয়ে মামলাটি সিআইডির নিকট ন্যস্ত করেন।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর