thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

‘আল-বদর টর্চার সেলে আটকদের হত্যা করা হয়’

২০১৪ মার্চ ০৪ ১৭:৩৫:৩৭
‘আল-বদর টর্চার সেলে আটকদের হত্যা করা হয়’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের পাঁচশাইল থানার আল-বদরদের টর্চার সেল সালমা মঞ্জিলে আটককৃত ১৫/১৬ জনকে হত্যা করা হয়’- বলে জবানবন্দি দেন জুলেখা খান।

মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২ তার জবানবন্দি গ্রহণ করে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেওয়াকালে তিনি এ কথা বলেন।

জবানবন্দি গ্রহণ করে জেরা করেন মীর কাশেম আলীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। জেরা শেষে পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।

জবানবন্দিকালে সাক্ষী বলেন, ‘আমার নাম জুলেখা খান (৫৭)। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমার বয়স ১৪ বছর ছিল। তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ছিলাম। আমি বি.এ পাস করেছি। আমি নিজে একজন ফ্যাশন ডিজাইনার এবং একটি ফ্যাশন ডিজাইনিং হাউজের মালিক’।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৬ সালে হারুন অর রশিদ খানের সাথে আমার বিয়ে হয়। আমার বিয়ের আগে বাবার কাছ থেকে জানতে পারি যে হারুন অর রশিদ খান একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমি আমার বাবার কাছ থেকে আরও জানতে পারি ১৯৭১ সালে হারুন অর রশিদ খান আল-বদর কমান্ডার মীর কাশেম আলী কর্তৃক নাকি ধৃত হয়ে নির্যাতিত হয়েছিলেন’।

জুলেখা খান বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে জানান ১৯৭১ সালে ২৮ নভেম্বর আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টা কি ১১টার দিকে চট্টগ্রাম শহরের কোনো এক চায়ের দোকান থেকে মীর কাশেম আলীর নেতৃত্বে আল-বদররা তাকে ও শহিদুল আলমকে তুলে ডালিম হোটেলে নিয়ে ৩/৪ দিন নির্যাতন করে। পরবর্তীতে সেখান থেকে আমার স্বামীকে পাঁচলাইশ থানার পিছনে ‘সালমা মঞ্জিল’ নামে আল-বদরদের একটি টর্চার সেলে নিয়ে যায়। তার হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে একটি বাথরুমে আটকিয়ে রেখে মীর কাশেম আলী ও অন্যান্য আল-বদর সদস্যরা নির্যাতন করতো। সেখানে আগে থেকেই আরও ১৭/১৮ জনকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, যার মধ্যে শহিদুল আলমও ছিল। সালমা মঞ্জিলে অবস্থানকালে আমার স্বামীকে মীর কাশেম আলী ৫/৬ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। সেখানে আমার স্বামীর সঙ্গে আটককৃত অন্য ১৫/১৬ জন বন্দিকে মেরে ফেলা হয়েছিল। এক আল-বদরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় তাকে তারা হত্যা করেনি।’

আদালতে সাক্ষী বলেন, ‘আমার স্বামীর কাছ থেকে জানতে পারি যে, তিনি চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং একই কলেজের ‘ছাত্র শক্তি’ নামে ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, মীর কাশেম আলী একই কলেজের ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাকে (আমার স্বামীকে) আহত অবস্থায় সালমা মঞ্জিলের টর্চার সেলের বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়।’

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এর আগে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এমসি/এনআই/মার্চ ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর