thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল 24, ৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ৭ শাওয়াল 1445

চলে গেলেন কথা সাহিত্যিক আফসার আমেদ

২০১৮ আগস্ট ০৫ ০১:২০:০৫
চলে গেলেন কথা সাহিত্যিক আফসার আমেদ

মহিউদ্দীন মোহাম্মদ, দ্য রিপোর্ট: বাংলা ভাষার অন্যতম কথা সাহিত্যিক আফসার আমেদ অকালেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। খুব বেশি নয়, মাত্র ৫৯ বছর বয়স হয়েছিল তার । এই সাহিত্যিকের মৃত্যুতে ওবাংলার পাশাপাশি এখানেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খুবই চমৎকার মানুষ ছিলেন তিনি।‌‘ সেই নিখোঁজ মানুষটা’র জন্য পেয়েছিলেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। এখন তিনিই জনপদ থেকে চিরদিনের জন্য নিখোঁজ হয়ে গেলেন। কোনো কোনো মৃত্যু থাই পাহাড়ের মত ভারী। তেমনই মৃত্যু নিশ্চয়ই আফসারের।

বেশকিছু দিন ধরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার বিকেল ৪ টা ৫৪ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রবিবার জোহরের নামাজের পর নিজ বাসভবনে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

গত বছর দুয়েক ধরেই নানাভাবেই তিনি অসুস্থ থাকছিলেন। বেশ কয়েকবার আরোগ্যের জন্য হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাসাহিত্যের একটি শক্তিশালী কলম থেমে গেল।

১৯৫৯ সালের ৫ এপ্রিল হাওড়া জেলার বাগনান থানার বাইনান কড়িয়া গ্রামে আফসার আমেদের জন্ম। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পরে বাংলা আকাদেমিতে যুক্ত হন। গল্প ও উপন্যাসে সমান দক্ষতা ছিল তার । প্রবন্ধ ও অনুবাদ কর্মেও ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ৩ খানি গল্পগ্রন্থ, ২২ টি উপন্যাস, প্রবন্ধ ও অনুবাদ গ্রন্থ ছিল বেশ কয়েকটি। নব সাক্ষর বয়স্কদের জন্য ও তিনি বই লিখেছেন।

১৯৭৯ সালে কিশোর বয়সে ‘পরিচয়’ পত্রিকায় লিখেছিলেন প্রবন্ধ ‘মুসলমান অন্দরে বিয়ের গীত’। তারপরই বেরোয় তাঁর প্রথম গল্প। শুরু থেকেই আফসার যেন এক পরিণত লেখক। জিন্নত বেগমের বিরহ মিলন, ডিপ টিউবওয়েলের দাম কত— এমন গল্প লিখতে লিখতেই প্রথম উপন্যাস ‘ঘরগেরস্তি’। শানু আলির নিজের জমি, আত্মপরিচয়, ব্যথা খুঁজে আনা, স্বপ্নসম্ভাষ প্রভৃতি উপন্যাসের পর আফসার প্রবেশ করেন তাঁর কিস্‌সা সিরিজে। ‘বিবির মিথ্যা তালাক ও তালাকের বিবি এবং হলুদ পাখির কিস্‌সা’ লিখে বাংলা সাহিত্যে সাড়া ফেলে দেন। একের পর এক কিস্‌সা তিনি লিখে চলেন। মুসলমান জীবনের অন্দরের প্রত্যাশা, প্রত্যাখ্যান, স্বপ্ন, আলো ও অন্ধকার আফসারের লেখায় এক সম্পূর্ণ ভিন্ন গদ্যে ফুটে উঠেছে।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর পাঠ নেন। কাজ করতেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে। লিখতেন প্রধানত লিটল ম্যাগাজিনে, তবে বাংলা ভাষার সমস্ত বিখ্যাত কাগজেই তাঁর লেখা বেরিয়েছে। পেয়েছেন ছোট গল্পের জন্য সোমেন চন্দ স্মারক পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার ছাড়াও আরও অজস্র পুরস্কার ও সম্মান। ২৭টি উপন্যাস এবং ১৪টি অন্যান্য বইয়ের রচয়িতা তিনি।

লেখালেখির বাইরেও, নানা রকম বিষয়ে পিছিয়ে পড়া মুসলিম সমাজের প্রতি তাঁর অনেক অবদান রয়েছে।

২০০২ সালে তাঁর লেখা ‘ধান জ্যোৎস্না’ উপন্যাস নিয়ে মৃণাল সেন তৈরি করেছেন ‘আমার ভুবন’ সিনেমা।

ব্যক্তিগত জীবনে তীব্র অর্থকষ্টে ছিল। যে কারণে বাংলা আকাদেমিতে চাকরি করতে শুরু করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে সেখানেও যোগ্য সম্মান পাননি তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ০৪,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর

সাহিত্য - এর সব খবর