thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৬ শাওয়াল 1445

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী মারা গেছেন

২০১৮ আগস্ট ১৬ ১৮:৪৪:৫৭
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী মারা গেছেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: দীর্ঘ অসুস্থতার পর ৯৩ বছর বয়সে মারা গেলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট, ২০১৮) বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউটস অব মেডিকেল সায়েন্সেস’র (এআইআইএমএস) বরাত দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এর আগে বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে মেডিকেল বুলেটিন জার্নাল এআইআইএমএস জানিয়েছিল, বাজপেয়ীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে।

বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে এদিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে ছুটে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাজপেয়ীর শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। হাসপাতালে প্রায় ৫০ মিনিট ছিলেন মোদি।

মোদি ছাড়াও বাজপেয়ীকে দেখতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, হর্ষ বর্ধন এবং বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি, স্মৃতি ইরানি।

চিকিৎসক আরতি ভিজ সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, গত নয় সপ্তাহ ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।

এআইআইএমএস’র ডিরেক্টর ডা. রণদীপ গুলেরিয়ার তত্ত্বাবধানে বাজপেয়ীর চিকিৎসা চলছিল। নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজি এবং পালমোনোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত একটি মেডিকেল টিম তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিল।

দীর্ঘদিন ধরে অটলবিহারী বাজপেয়ীর একটি কিডনি অচল। ২০০৯ সালে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে তার স্মৃতিশক্তিও অনেকটা লোপ পায়।

১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯ সালে পর পর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৩ মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

এদিকে বিবিসি তার বর্ণাঢ্য জীবন সম্পর্কে জানায়, মি. বাজপেয়ী হিন্দু পুনরুত্থানবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রচারক ছিলেন, এবং সংঘেরই রাজনৈতিক দল জনসংঘের সদস্য ছিলেন। তবুও তখন থেকেই হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে একজন মধ্যপন্থী বলে তাঁকে মনে করা হতো।

কানপুরে পড়াশোনা করেছিলেন মি. বাজপেয়ী। তারপরে আইন পড়েছেন। তার বাবা আর তিনি একই বর্ষের ছাত্র ছিলেন, থাকতেনও একই হোস্টেলে। ছাত্রজীবনে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের জন্য কিছুদিন জেল খাটলেও তারপর থেকেই মি. বাজপেয়ী হিন্দুত্ববাদী নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর ভক্ত হয়ে পড়েন।

রাজনৈতিক দায়িত্বের মধ্যেও তিনি নিয়মিত কবিতা লিখতেন, প্রচুর বই পড়তেন, আর সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন। দলীয় সতীর্থ লালকৃষ্ণ আদভানিকে দিয়ে দিল্লির রিগ্যাল সিনেমা হলে বহু নতুন সিনেমার প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতে যেতেন তিনি, সেকথা বহুল প্রচারিত।

তবে সেই লালকৃষ্ণ আদভানিই যখন দলের প্রধান হিসাবে রামমন্দির নিয়ে আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠলেন, যার পরিণতিতে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে দিয়েছিল, তখন মি. বাজপেয়ীকে বিশেষ মুখ খুলতে দেখা যায় নি। দু'হাজার চার সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে আর কখনও আসেন নি মি. বাজপেয়ী।

বাক্যহারা হওয়ার প্রায় এক দশক পরে বৃহস্পতিবার সমাপ্ত হল একাধারে রাজনীতিবিদ, সুবক্তা আর কবি অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/একেএমএম/আগস্ট ১৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর