thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ 24, ১৫ চৈত্র ১৪৩০,  ১৯ রমজান 1445

মিসরে শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ ৭৫ ব্রাদারহুড সদস্যের মৃত্যুদণ্ড

২০১৮ সেপ্টেম্বর ০৮ ২০:২২:৩৩
মিসরে শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ ৭৫ ব্রাদারহুড সদস্যের মৃত্যুদণ্ড

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ২০১৩ সালের এক সহিংসতার ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রায় সাতশ জনের সাজার রায় দিয়েছে মিসরের একটি আদালত। রায়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের ৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সংগঠনটির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা।

কারাদণ্ডের সাজা পেয়েছন প্রায় ছয়শ জন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ওই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শত শত বিক্ষোভকারী প্রাণ হারালেও শনিবার দেওয়া আদালতের রায়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষিত হয়নি। সেজন্য মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে এ রায়কে বিচারের নামে প্রহসন আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

২০১২ সালের ৩০ জুন মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন মোহাম্মদ মুরসি। সেনাপ্রধান জেনারেল সিসির ক্ষমতা দখলের পক্ষে সমর্থন ছিল ইসরায়েল, সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের। সেসময় মুরসির সমর্থকরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলে। তখন তাদের ওপর চড়াও হয়েছিল সরকারি বাহিনী। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ব্রাদারহুডকে। আর মুরসির ঠিকানা হয়েছিল কারাগারে। সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে হত্যার মতো অভিযোগ ছাড়াও সহিংসতা ছাড়াবার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সরকার দাবি করেছিল, বিক্ষোভকারীদের অনেকের কাছে ছিল অস্ত্র এবং তারা নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্যকে হত্যা করেছে। যদিও প্রথমে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর ৪০ জন সদস্যের নিহত হওয়ার দাবি করেছিল।

২০১৩ সালে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রায় ৮০০ আন্দোলনকারী প্রাণ হারিয়েছিল। এমন অবস্থায় উল্টো বিক্ষোভকারীদের সাতশ জনের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শনিবার দেওয়ার আদালতের রায়কে ‘লজ্জ্বাজনক’ আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা সর্বোচ্চ কঠিন ভাষায় আজ ঘোষিত রায়ের নিন্দা জানাচ্ছি। নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও সদস্যের সাজা না হওয়ায় প্রমাণিত হয়, এটা ছিল বিচারের নামে প্রহসন।’

তোরা কারাগার প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ আদালতের দেওয়া রায়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষস্থানীয় একজনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে এশাম আল এরিয়ান, মোহামেদ বেলতাগি এবং সাফওয়াত হিগাজি। তাছাড়াও মুসলিম ব্রাদারহুডের আধ্যাত্মিক নেতা মোহামেদ বাদিসহ আরও অনেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে পাঁচ বছর থেকে ১৫ বছর মেয়াদী কারাবাসের সাজা ঘোষিত হয়েছে। কারান্তরীণ থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি।

২০১৪ সালে জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি মিসরের ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে বিরোধী মতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রূঢ় পদক্ষেপ নিয়ে চলছেন। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হওয়া বা হামলার পরিকল্পনা করার মতো অভিযোগে দেশটিতে বহু নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। সিসির সমর্থকরা মনে করেন, ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিচরণক্ষেত্র মিসরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করতে এমন কঠোর অবস্থানের দরকার রয়েছে। যদিও সমালোচকদের ভাষ্য, বিরোধীদের এমনভাবে দমন করা ও স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করে দেওয়ার ঘটনা আধুনিক মিসরের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর